করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেই নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস এবং হোয়াইট ফাঙ্গাস। এবার মারণ ছত্রাক সংক্রমণ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের হানায় কলকাতায় ফের এক রোগীর মৃত্যু। চিকিৎসার জন্য তাঁকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ওষুধ অ্যাম্ফোটিরিসিন-বি দেওয়া হয়েছিল। ভোরে মৃত্যু হয় ওই রোগীর। ভর্তি ছিলেন শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে। বেশ কয়েকদিন ধরে করোনা আক্রান্ত হওয়ায় পাশাপাশি, তিনি মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসেও আক্রান্ত হন। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা চলছিল তার কিন্তু আদতে শেষ রক্ষা হল না। এই নিয়ে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে দ্বিতীয় রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটল কলকাতায়।
এই পরিস্থিতি উদ্বিগ্ন কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসকে মহামারী ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কয়েকটি রাজ্য এটিকে মহামারী ঘোষণা করেও দিয়েছে। নতুন এই রোগে দিল্লিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১৯৭ জন। এই প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই রাজ্যের মানুষকে সতর্ক করেছেন দিল্লির স্বাস্থ্য মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন। এই রোগ সংক্রান্ত কোনও উপসর্গ দেখা দিলেই সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে রিপোর্ট নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এছাড়াও এই রোগ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। করোনার মতোই নতুন এই মহামারীর সঙ্গে লড়তে কোমড় বেঁধে নেমেছে সরকার।
কালো ছত্রাকজনিত বিরল এই রোগ দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে শরীরে৷ বিশেষ করে করোনা আক্রান্তদের শরীরেই বাসা বাঁধছে এই রোগ। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিক রোগীদের শরীরে এই ছত্রাকের সংক্রমণের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। মূলত যাঁদের শরীরে স্টেরয়েড প্রয়োগের মাত্রা বেশি রয়েছে। ডায়াবেটিকদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ মতো সুগার কোন স্তরে আছে সেটি পরীক্ষা করে ওষুধ খেতে হবে।
এই পরিস্থিতিতে নতুন গাইডলাইন জারি করল স্বাস্থ্য দফতর। গাইডলাইনে উল্লেখ, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ এড়াতে মাস্কের সঠিক ব্যবহার জরুরি। বিশেষ করে ধুলোবালিময় এলাকা বা নির্মাণস্থলে গেলে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে। বাগানে বা মাটি নিয়ে কাজ করলে, জুতো, লম্বা ঝুলের ট্রাউজার, ফুল স্লিভ শার্ট এবং গ্লাভস পরা জরুরি। সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। কোভিড-পরবর্তী ও ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে ব্লাডে গ্লুকোজের মাত্রায় নজর রাখতে হবে। স্টেরয়েড, অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার সতর্কতা জরুরি।