একের পর এক দুর্যোগ হানছে অসমের ওপর দিয়ে। কিছুদিন আগের বন্যা পরিস্থিতির সামলে ওঠার আগেই আরো এক বন্যার কবলে অসম। এই মুহূর্তে আরও অবনতির দিকে এগোচ্ছে অসমের বন্যা পরিস্থিতি। এক ধাক্কায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ১৬। উল্লেখ্য গত মাসে একটানা বৃষ্টি এবং বন্যায় অসমে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরে ফের অতিভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের এই রাজ্যে। চলতি সপ্তাহের প্রথম থেকেই গোটা রাজ্য জুড়ে চলছে ঝড়-বৃষ্টির তান্ডব।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই অসমের ২৫টি জেলায় বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে এবং তার জেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ১১ লক্ষ মানুষ। একসপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র এবং গৌরঙ্গ নদী। আর মূলত সেই কারণেই এই নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলি ভেসে গিয়েছে বলে খবর।
অন্যদিকে জানা যাচ্ছে অসমের বন্যা পরিস্থিতির কারণে শুধুমাত্র চলতি সপ্তাহেই ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে কেউ জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছেন, কারো আবার মৃত্যু হয়েছে ভূমিধসের কারণে। গতকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই প্রকাশ্যে এসেছিল ভূমিধসের কারণে অসমের রাজধানী গুয়াহাটিতে বাড়ি চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে দুই শিশুর। জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই প্রায় ১৭০০ গ্রামকে গ্রাস করেছে অসমের বন্যা। ফলে ১৯৭৮২.৮০ হেক্টর জমির ফসল জলের তলায় চলে গিয়েছে।
গুয়াহাটির বিভিন্ন জায়গায় ভূমিধসের মতো ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। এই ভূমি ধসের কারণে তিনজন আহত হয়েছেন বলেও খবর। অন্যদিকে প্রবল বর্ষণ এবং বন্যার কারণে ইতিমধ্যেই অসমের বহু জেলা সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বাতিল হয়েছে বহু দূরপাল্লার ট্রেন। তবে শুধু অসম নয়, অসমের পার্শ্ববর্তী দুটি রাজ্য মেঘালয় এবং অরুণাচল প্রদেশেও ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে বিগত কয়েকদিন ধরে। চলতি সপ্তাহে মেঘালয়তেও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই দুই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেও ধস নেমেছে বলে খবর। প্রবল বর্ষণ এবং ভূমিধসের কারণে মেঘালয়ের ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্পূর্ণ বন্ধ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এর জেরে মেঘালয়ের সঙ্গে ত্রিপুরা, দক্ষিণ আসাম এবং মিজোরামের যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়েছে।