এখনও পর্যন্ত বার্ড ফ্লুর প্রভাব না পড়লেও বেঙ্গল সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই সতর্ক থাকছে। বার্ড ফ্লুর আতঙ্কের জন্য চিকেন নিষিদ্ধ বেঙ্গল সাফারি পার্কে। পার্কের কোনও পশুকেই এখন আর চিকেন দেওয়া হচ্ছে না। শুধু এটাই নয়, বিদেশি পাখিদের উপর বিশেষ নজরদারি রাখা হয়েছে। এমনকী স্যানিটাইজ করা হচ্ছে সাফারির গাড়ির চাকাও। পর্যটকদের হাত-পা ধুয়ে তার পরই ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে পার্কে। পার্ক কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। যার জেরে প্রাণীদের জন্য চিকেন বন্ধ রাখার পাশাপাশি পাখিদের ওপর বিশেষ নজরদারির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। শিলিগুড়ির অদূরে সাফারি পার্কে বাঘ, লেপার্ড, সাপ-সহ আরও কিছু মাংসাশী প্রাণী রয়েছে। তাদের জন্য বছরে প্রায় ৯ লক্ষ টাকার ১ হাজার ৫৩৫ কিলো দেশি মুরগির মাংস আনা হয়। আবার ৩১ লক্ষ টাকার ১২ হাজার কেজি পোল্ট্রির চিকেন লাগে। তবে যেই বার্ড ফ্লুর আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তখন থেকেই সবরকম মুরগির মাংসের উপর বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
তার পরিবর্তে এখন মাটন এবং মহিষ ও শূকরের মাংসের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। সাপেদের জন্য ইঁদুর, খরগোশ দেওয়া হচ্ছে। সাফারির জন্য যে সকল গাড়ি যাচ্ছে সেগুলির চাকা স্যানিটাইজ করা হচ্ছে। বেড়িয়ে আসার পরেও সেগুলি স্যানিটাইজ করে ফেলা হচ্ছে। এদিকে সাফারি পার্কে প্রচুর বিদেশি পাখি রয়েছে। সেগুলির ওপর বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। এর জন্য আলাদা লোক নিযুক্ত করা হয়েছে। শুধুমাত্র তাঁরাই পাখিদের কাছে দেখাশোনা ও খাবার দেওয়ার মতো কাজ করতে পারবেন। এইসব কর্মীদেরও হাত-পা ভালো করে ধুয়ে নেওয়ার পাশাপাশি স্যানিটাইজ করানো হচ্ছে। পার্ক সূত্রে খবর, আবার এইসব কর্মীদের জন্য অন্য কোনও পশুদের খাঁচার সামনে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করাও হয়েছে।
যেভাবে বার্ড ফ্লুর আতঙ্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে প্রাণী বিনিময়ও বর্তমানে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এদিকে পার্কে আসা লোকজনদের হাত-পা ধুয়ে ভেতরে ঢুকতে আপত্তি থাকলেও তাদের বিষয়টি বোঝাতেই সকলেই সম্মতি প্রকাশ করেন। তাই এখন আর কোনও সমস্যা নেই। এ বিষয়ে রাজ্য জু অথরিটি বোর্ডের সদস্য সচিব সৌরভ চৌধুরী বলেন, “বার্ড ফ্লুর খবর পাওয়া মাত্রই আমরা চিকেন বন্ধ করে দিয়েছি। পার্কে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কোনওরকম প্রাণী বিনিময় এই সময় করা যাবে না। তবে চিকেনের বদলে অন্য খাবারের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এখনও এদিকে বার্ড ফ্লু না এলেও আমরা কিন্তু প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছি। পার্কের সকলকে সতর্ক করা হয়েছে। বিশেষ করে যারা পাখি দেখভাল করছে তাদের ওপর দায়িত্ব অনেকটাই বেশি রয়েছে।”