মৃ*ত শিশুদের পরিবারকে ৮ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা পূর্ব চানমারি এলাকায় গভীর গর্তের জলে ডুবে মর্মান্তিক মৃত্যু হওয়া দুই শিশুর পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। আজ বিকেলে জিরানিয়া এলাকায় মৃত ভাইবোনের আদি বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনিক নিয়ম মেনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির হাতে ৮ লক্ষ টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আগরতলা পূর্ব চানমারি এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণ দেবনাথের ছেলে প্রসেনজিৎ দেবনাথ (১১) এবং মেয়ে প্রিয়াঙ্কা দেবনাথ (০৭)-এর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। নির্মাণ কাজে খনন করা একটি জলভর্তি গভীর গর্ত থেকে গতকাল সকালে একসঙ্গে দুই ভাইবোনের নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। গত শনিবার থেকে বাড়ির লোকজন তাদের খুঁজে পাচ্ছিলেন না। শেষপর্যন্ত মৃত অবস্থায় তাদের পাওয়া যায়। আর এই খবর পাওয়ার পরই মৃত শিশুদের পরিবারকে সমবেদনা জানান মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই শোকসন্তপ্ত পরিবারকে বিয়োগ ব্যাথা সহ্য করার ক্ষমতা প্রদান করুক সর্বশক্তিমান ঈশ্বর। এই দুঃসময়ে পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করব আমরা।

এই অবস্থায় আজ বিকেলে শোকসন্তপ্ত পরিবারটির খোঁজখবর নিতে প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের নিয়ে জিরানিয়ায় ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা। তিনি কথা বলেন সন্তানহারা পিতা কৃষ্ণ দেবনাথ, তার সহধর্মিণী ও অন্যান্য আত্মীয় পরিজনদের সঙ্গে। এই বেদনাদায়ক পরিস্থিতিতে তাদের সকলকে সান্তনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকার যে তাদের পাশে রয়েছে – সেই আশ্বাসও দেন তিনি। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাতে মুখ্যমন্ত্রী জানান, জনৈক ব্যক্তি ব্যক্তিগত কাজের জন্য সেখানে গর্ত খুঁড়েছিল। বৃষ্টির জল ও সাবমার্সিবলের জলে ওই গর্ত ভর্তি হয়েছিল। আর সেখানে খেলতে যায় প্রসেনজিত ও প্রিয়াঙ্কা নামে দুই ভাইবোন। তারা একজন আরেকজনকে বাঁচাতে গিয়ে জলে ডুবে যায়। প্রথমে তাদের পরিবার খবর পায়নি। প্রায়শই সেখানে খেলতে যায় তারা। তাদের বাড়ি জিরানিয়া হলেও নতুন বাড়ি করেছে চানমারিতে। আর সেখানেই এই বেদনাদায়ক ঘটনা। এই মর্মান্তিক খবর জানতে পেরে সকলেই দুঃখ পেয়েছেন। এই মৃত্যু ভাষায় প্রকাশ করার নয়।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি গতকাল এই ঘটনার খবর পাওয়ার পর জেলাশাসককে খোঁজখবর নিতে বলেছি। মহকুমা শাসক সহ অন্যান্য আধিকারিকরা সেখানে যান। সিসিটিভি ফুটেজ দেখা হয় এবং একটা প্রাথমিক রিপোর্ট দেওয়া হয় আমাকে। মৃত শিশুদের বাবা কৃষ্ণ দেবনাথ একজন দিনমজুর। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এবং ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা করে মোট ৮ লক্ষ টাকা সহায়তা দেওয়া হয় তাদের। এর পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দ্বাদশ শ্রেণী পাঠরত বড় মেয়ের জন্য সরকারিভাবে কিছু করা যায় কিনা সেটাও নিশ্চিত করা হবে। এনিয়ে স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা পর্যটন ও পরিবহণ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, পশ্চিম জেলার জেলাশাসক বিশাল কুমার সহ অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকগণ।