মালদার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সন্দেহজনক এক চীনা নাগরিককে আটক বিএসএফের ২৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের জাওয়ানেরা

মালদার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকা থেকে সন্দেহজনক অবস্থায় ঘোরাফেরা করতে দেখে এক চীনা নাগরিককে আটক করলো বিএসএফ। ওই চীনা নাগরিকের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ল্যাপটপ , তিনটি মোবাইল ক্যামেরা,  সহ বেশকিছু নথিপত্র। বৃহস্পতিবার সকাল ছটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে কালিয়াচক থানার আকন্দবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মিলিক সুলতানপুর এলাকায়। সাতসকালে ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় কি কারনে ছবি তুলতে এসেছিল ওই চীনা নাগরিক। এবং কিসের ছবি ওই চীনা নাগরিক ক্যামেরাবন্দি করছিল সে ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে বিএসএফ এবং গোয়েন্দা কর্তারা।

এদিকে  আটক চীনা নাগরিককে বিএসএফের ২৪ নম্বর ব্যাটালিয়নের জাওয়ানেরা মহদীপুর এলাকার ক্যাম্পে নিয়ে আনা হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য । যদিও ওই চীনা নাগরিককে কি বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সে ব্যাপারে পরিষ্কার করে কিছু জানা যায় নি। পরে অবশ্য এই ঘটনার ব্যাপারে  বিএসএফের পক্ষ থেকে কালিয়াচক থানার পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।  তবে ওই চীনা নাগরিকের কাছ থেকে বাংলাদেশী ভিসা পাসপোর্ট উদ্ধার হয়েছে। সীমান্তের ওপার থেকে কাঁটাতার বিহীন এরিয়া দিয়েই ভারতীয় সীমান্তে ঢুকে পড়েছিল ওই চীনা নাগরিক বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে বিএসএফ কর্তারা।  ওই চীনা নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। 

যদিও বিএসএফ ও পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছেে, মিলিক সুলতানপুর এলাকার বাংলাদেশের ও প্রান্তে ছবি তুলতে গিয়েই কাঁটাতারের বেড়া বিহীন এলাকা দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে ফেলে ওই চীনা নাগরিক।  এরপরই বিএসএফের ২৪ নম্বর ব্যাটেলিয়ান জাওয়ানেরা সেই সময় ভারতীয় সীমান্তে ওই চীনা নাগরিককে দেখতে পাই। তড়িঘড়ি তাকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হলেও ভারতীয় কোন পাসপোর্ট-ভিসা দেখাতে পারে নি । এরপর ওই চীনা নাগরিককে সন্দেহজনক গতিবিধী এবং অবৈধভাবে দেশে প্রবেশ করার অভিযোগে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে আসেন বিএসএফ কর্মীরা। 

বিএসএফ এবং পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, আটক হওয়া ওই চীনা নাগরিকের নাম হান জুম উই (৪৫) । তিনি চীনের বেইজিং শহরের বাসিন্দা। তার কাছ থেকে কয়েক হাজার টাকার বাংলাদেশি নোট, আমেরিকার ডলার উদ্ধার হয়েছে । এর সাথে বেশ কিছু নথিপত্র পেয়েছে বিএসএফ কর্তারা।

এদিকে করোনা সংক্রমনের মধ্যে মালদার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সন্দেহজনকভাবে চীনা নাগরিক আটকের ঘটনায় বিভিন্ন মহলে নানান ধরনের চর্চা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কিভাবে ওপার সীমান্ত থেকে বিজিবি (বর্ডার গার্ড অফ বাংলাদেশ) নজর এড়িয়ে এবার সীমান্তে অবৈধভাবে প্রবেশ করলো ওই চীনা নাগরিক।  বাংলাদেশের ভিসা পাসপোর্ট থাকার পরেও কেন ওপারের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী এই চীনা নাগরিক কে সতর্ক করলো না। এছাড়াও সাতসকালে ভারতীয় সীমান্তে কি ছবি তুলতে এসেছিল ওই চীনা নাগরিক এসব বিষয় নিয়েও তদন্ত করছে বিএসএফ ও পুলিশ কর্তারা।

এদিকে ওই চীনা নাগরিককে আটক করার পর পরই তার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা করা হয়েছে বলে একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে। যদিও বিএসএফের তরফ থেকে ওই চীনা নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পরে ওই চীনা নাগরিক পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে বিএসএফের পক্ষ থেকে। 

যদিও এ ব্যাপারে মালদার পুলিশ সুপার কোন মন্তব্য করেননি। এমনকি বিএসএফের পদকর্তাদের পক্ষ থেকেও কোনো রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *