বনদপ্তরের জমিতে প্রায় ১ লক্ষ গাঁজা গাছ ধ্বংস,গাঁজা চাষিদের মাথায় হাত। ত্রিপুরা সরকারের নেশা মুক্ত রাজ্য গঠনের লক্ষ্যে পুলিশের উদ্যোগে নেশা বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার কলমচৌড়া থানাধীন মানিক্যনগর ও ভেলুয়ারচর দুটি এলাকায় পুলিশ ও টিএসআর-এর ক্রাইম ব্রাঞ্চের এনটি নারকোটিক্স ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে গাঁজা বাগান চিহ্নিত করে এই যৌথ অভিযানে প্রায় এক লক্ষ উপযুক্ত গাঁজা গাছ ধ্বংস করা হয়। অভিযানের ফলে গাঁজা চাষিদের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত চলে এই বিশেষ অভিযান। কলমচৌড়া থানার ওসি নাড়ু গোপাল দেবের নেতৃত্বে পুলিশ ও টিএসআর-বাহিনী মানিক্যনগর ও ভেলুয়ারচর দুইটি এলাকায় বনদপ্তরের জমিতে অবৈধ গাঁজা চাষের সন্ধান পায়। মোট ৬ টি প্লটে বিস্তৃত ৩০ একর জমিতে চাষ করা গাঁজা গাছ ধ্বংস করা হয়। অভিযান পরিচালনাকারীরা জানান,গাঁজা গাছগুলো উপযুক্ত পরিণত অবস্থায় ছিল,যা বিপুল পরিমাণে মাদক সরবরাহে ব্যবহৃত হতে পারত। তবে সময়মতো অভিযানের ফলে এই চাষ পুরোপুরি ধ্বংস করা সম্ভব হয়েছে। কলমচৌড়া থানার টু আই সি স্যাম শঙ্কর রিয়াং বলেন,”সরকার নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়ার জন্য বদ্ধপরিকর। আমরা গাঁজা চাষ বন্ধ এবং নেশা মুক্ত সমাজ গঠনের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। তবে মানুষের সহযোগিতা ছাড়া এটি সম্ভব নয়। “তিনি সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের কাছে সহযোগিতার আহ্বান জানান। ত্রিপুরার বর্তমান সরকার গাঁজা ও নেশা বিরোধী পদক্ষেপে জোর দিলেও গাঁজা চাষ পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। রাজ্যে ২০১৮ সালে বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর গাঁজা চাষ কিছুটা হ্রাস পেলেও সম্প্রতি এটি আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিশেষ করে সোনামুড়া, মেলাঘর, এবং কলমচৌড়া থানার এলাকাগুলোতে গাঁজা চাষের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
পুলিশ জানায়, শুধুমাত্র আইনি ব্যবস্থা দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। সামাজিক সচেতনতা এবং মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গড়া সম্ভব হবে না। এই ধরনের অভিযান শুধুমাত্র অবৈধ গাঁজা চাষের বিরুদ্ধে নয়, বরং যুবসমাজকে নেশার করাল গ্রাস থেকে বাঁচানোর প্রচেষ্টা। মানিক্যনগর ও ভেলুয়ারচর দুটি স্থানে অভিযান ত্রিপুরা পুলিশের একটি সফল পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান কলমচৌড়া থানার পুলিশ।