ভূত চতুর্দশীর দিন ধুমধাম করে পূজিতা হয়, দশমাথার  মহাকালি  

রক্ত উৎস্বর্গের মধ্য দিয়ে শুরু হল দশমাথার  মহাকালি পূজো। প্রধান প্রসাদ শোল মাছের টক।ইতিহাস বিজড়িত প্রথা মেনে  দিনের আলোয় পূজিতা হল দশ মাথার এই কালী মাতা। যা মাহাকালি নামে পরিচিত। বলি প্রথা ও শোল মাছের টক বিশেষ প্রসাদ।১৯৩০ সাল, দেশে তখন ইংরেজদের রাজত্ব। সারাদেশের সঙ্গে মালদাতেও সাধারণ মানুষের ওপর চরম অত্যাচার চালিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। ব্রিটিশ শাসকদের সেই অত্যাচার সহ্য করতে পারছিল না মালদার শহরবাসী ও। সেই সময় গঙ্গা বাগ এলাকার কিছু মানুষ ব্রিটিশ শাসকের অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নানা বিধ অস্ত্রে সজ্জিত বিদেশিদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলে লাগবে শক্তি আর সাহস। শারীরিক ভাবে নিজেদের সুদৃঢ় করে তুলতে সেই মানুষেরা একটি ব্যায়ামাগার নির্মাণ করেন। একই সঙ্গে নিজেদের মনকে শক্ত করতে শুরু করেন কালীর আরাধনা। শক্তির আরাধনায় তাদের আরাধ্য ছিলেন দশ মাথা মহাকালি।

সেই থেকে এখনো হয়ে আসছে এই মহাকালি পুজো। তবে পুড়াটুলি থেকে পুজোর স্থান পরিবর্তন হয়ে এসেছে ইংরেজবাজার শহরের গঙ্গাবাগে। সারা জেলায় এই পুজো ১০ মাথার কালী নামে পরিচিত। আজ চতুর্দশীর দিন ধুমধাম করে পূজিতা হয় এই দেবী। কালীমূর্তিতেও এখানে কিছুটা বিশেষ অর্থ রয়েছে। দেবীর ১০ মাথা, দশ হাত ও ১০ পা রয়েছে। প্রতিমায় শিবের কোন অস্তিত্ব নেই। দেবীর পায়ের তলায় রয়েছে অসুরের কাটা মুন্ডু। প্রতিহাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র। সেই মত আজ মালদা শহরের ফুলবাড়ী থেকে প্রতিমা বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে নিয়ে আসা হয় গঙ্গাবাগ এলাকায় পূজা মন্ডপে। ওড়িশার ঢোলক বাজনা, নবদ্বীপের কীর্তন দল সহ বিভিন্ন বাদ্য যন্ত্র সহকারে গোটা শহর জুড়ে এই শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মহাকালির আরাধনায় ব্রত হন ভক্তরা।