পুরাতন মালদা পুরসভা এলাকায় কোরোনা আবহের মধ্যেও শুরু হলো চড়ক উৎসব

কোরোনা আবহের মধ্যেও শুরু হলো চড়ক উৎসব। যদিও গতবছর লকডাউনের জেরে এই চড়ক উৎসবের কোন জৌলুস ছিল না। কিন্তু এবারে করোনা সংক্রমনের প্রভাব মারাত্মকভাবে থাকলেও বিভিন্ন এলাকায় ধুমধাম করে পালিত হয়েছে চড়ক মেলা এবং উৎসব । পুরাতন মালদা পুরসভা এলাকায় চৈত্র মাসের সংক্রান্তিতে বাচামারি এলাকায় উৎসবে মেতে ওঠেন ভক্তেরা। প্রায় ৬৯ বছরের পুরনো এই  চড়ক পুজো প্রতি বছর চৈত্র মাসের শেষে বাচামারি এলাকায় পালিত হয়। এই পূজাকে ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা তৈরি হয়েছে এই এলাকায়। বিভিন্ন দেব-দেবী রূপে সেজে রাস্তায় বের হয় বহু ভক্তের। শোভাযাত্রার পাশাপাশি চরক কাঠে মধ্যে নিজেদেরকে শূলবিদ্ধ করে ঘোরেন অনেক ভক্তেরা। যা দেখতে হাজারো মানুষ ভিড় করেন বাচামারি এলাকার মাঠে । পাশাপাশি এই উৎসবকে ঘিরে শিব , পার্বতীর পুজো হচ্ছে ধুমধাম করে। ওই এলাকার মাঠে চরকের কাঠ বসানো হয়েছে। সেখানেই রয়েছে শূলবিদ্ধ ভক্তদের ভিড় । এবারে এই চড়ক পূজার উৎসবকে ঘিরে মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

পুরাতন মালদা পুরসভার বাচামারি এলাকায় গত ৬৯ বছর ধরে ঐতিহ্যের সাথে চলে আসছে চড়ক পূজার এই মেলা।  সংশ্লিষ্ট এলাকার একটি পুকুর থেকে তুলে বসানো হয় চড়ক কাঠ। ওই এলাকার মন্দির প্রাঙ্গণের মাঠে যেখানে চড়ক পূজা ভক্তরা দেব দেবীর সামনে নিজেদেরকে শূলবিদ্ধ করে ঘোরানোর মধ্যেই চলে দেব দেবীর আরাধনা। তার আগে বিভিন্ন সন্ন্যাসী এবং ভক্তেরা দেবদেবীর সং সেজে শোভাযাত্রায় শামিল হন। 

বুধবার ছিল চড়ক পূজার মেলা । করোণা আবহের মধ্যেও আংশিকভাবে মেলার ব্যবস্থা করেছে বাচামারি চড়ক পূজা কমিটি ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি সুবল হালদারের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল চরক পুজো এবং মেলা । সুবলবাবুর  অবর্তমানে এই পুজোর হাল ধরেছেন তার ছেলে তমাল হালদার । এর সঙ্গে পাড়া-প্রতিবেশীরা নানান ভাবে সহযোগিতা করে থাকেন। গতবছর লকডাউন এর জেরে এই উৎসবের মেলা বন্ধ ছিল। তবে এবারে সেই মেলা ভক্তদের দাবি মেনে হয়েছে। 

চড়ক পূজা উদ্যোক্তা তমাল হালদার বলেন, করোনা সংক্রমনের মধ্যে সরকারি বিধি মেনেই এই পুজো পালিত হয়েছে। পুজোর কাঠামো মন্দির প্রাঙ্গণে বসানো হয়েছে। খুব কম সময়ের মধ্যেই এবারের পূজো সেরে ফেলা হচ্ছে। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, চৈত্র মাসের সংক্রান্তিতে আজকের দিনেই ধুমধাম করে পালিত হয় চরক পুজো। রাস্তায় বিভিন্ন দেবদেবীর সং সেজে বেড়ান ভক্তেরা। যা দেখার জন্য সাধারণ মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। করণা মহামারীর জেরে গত বছর লকডাউন ছিল, যার ফলে সেই বছরেই উৎসব ঠিকভাবে পালন করতে পারে নি ভক্তেরা। তবে এবারের পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে। ঈশ্বরের কৃপায় এবারে চড়ক পূজার উৎসবে বউ ভক্তরাই শামিল হতে পেরেছেন।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *