উমফানের ত্রাণ নিয়ে যে গ্রামে গ্রামে বিস্তর দুর্নীতি হচ্ছে সেই অভিযোগ জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই উঠতে শুরু করেছিল। রথের পরের দিন সর্বদল বৈঠকে ত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে ক্ষোভের জ্বালামুখ খুলে দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ, সুজন চক্রবর্তীরা। তার পরেও অশান্তি থামেনি। কুলতলিতে খুনোখুনি পর্যন্ত হয়ে গিয়েছে। আজ, সোমবার বিকেলে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে এই ত্রাণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “দ্রুত টাকা পাঠাতে গিয়ে কোথাও কোথাও ভুল হয়ে গিয়েছে।”
এ ব্যাপারে বিজেপি রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ বলেন, “তৃণমূলের নেতাদের চুরি ধরা পড়ে গিয়েছে। দলের নেতাদের লুঠ ঢাকতে মুখ্যমন্ত্রী এসব কথা বলছেন।” তিনি আরও বলেন, “ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে তো টাকা দিতেই হবে। কিন্তু যে তৃণমূলের নেতারা টাকা মেরে দিয়েছিল তাদের থেকে টাকা ফেরত নিয়ে ছেড়ে দিলে হবে না। সরকারি টাকা চুরির অভিযোগ দায়ের করে শাস্তি দিতে হবে।”
বিধানসভার বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর যদি সৎ সাহস থাকত তাহলে আজকের মতো সেদিনের সর্বদল বৈঠকটাও লাইভ দেখাতেন। আমরা সে দিন গ্রাম ধরে, নেতাদের নাম ধরে বলেছিলাম কার শালি, কার ননদ টাকা পেয়েছে।” যাদবপুরের বিধায়কের কথায়, “আমরা দাবি করেছি কারা টাকা পাচ্ছেন তাঁদের নামের তালিকা বিডিও অফিসের সদর দরজার সামনে ঝুলিয়ে দিন। কিন্তু সরকারের সেটা করার বুকের পাটা নেই।”
দুই চব্বিশ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর-সহ উমফান বিধ্বস্ত প্রায় সব জেলা থেকেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে থাকে। জনমানসে ক্ষোভ এমন জায়গায় যায় যে, দেখা গিয়েছে পঞ্চায়েত প্রধানকে কান ধরে উঠবস করাচ্ছেন গ্রামবাসীরা।
এই ঘটনা যেমন দেখা গিয়েছে বাসন্তীতে তেমনই তৃণমূলের উত্থানভূমি সিঙ্গুরেও। দলীয় বৈঠক করে শাসকদলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব বার্তা দিয়েছেন, নিচু তলার কেউ যেন রেশন এবং ত্রাণ নিয়ে নাক না গলায়। যা করার প্রশাসন করবে।