বিধানসভা নির্বাচনে কালিয়াচকে তৃণমূল জয়ী হওয়ায়, দলের পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে দুষ্কৃতীরা আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনায় তুমুল আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পরপর তিনবার কালিয়াচকের আলিনগর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রুমি বিবির বাড়িতে আগুন ধরিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার পর পরিবার নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটছে তৃণমূল দলের পঞ্চায়েত প্রধান। পুরো বিষয়টি কালিয়াচক থানার পুলিশ এবং দলের জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান রুমি বিবি ও তার স্বামী মহম্মদ এহেসানুল হক। কিন্তু এখনো পর্যন্ত দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করতে পারে নি পুলিশ এমনকি পুরো বিষয়টি নিয়ে মোথাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল দলের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকেও জানিয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান। দ্রুত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি করা হয়েছে জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে আলিপুর ১নং গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন পঞ্চায়েত প্রধানের পরিবার । আর এই ঘটনার পরই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রতীকে জয়ী হয়ে আলিনগর- ১নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচিত হন রুমি বিবি। তাঁর স্বামী মহম্মদ এহেসানুল হক এলাকার তৃণমূল নেতা হিসেবে পরিচিত। এছাড়াও এলাকায় শিক্ষার প্রসারেও যথেষ্ট অবদান রয়েছে তাঁর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে।
তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী এহেসানুল হক বলেন, স্থানীয় সকলের সঙ্গে তাঁদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের বিপদে আপদে তাঁদের পাশে থাকার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছুদিন ধরে কেউ বা কারা তাঁর এবং তাঁর পরিবারের ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। এর আগে দুবার তাঁদের বাড়িতে আগুন লাগানো হয়। কিন্তু কোনোক্রমে প্রতিবারেই তাঁরা প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন। সোমবার গভীর রাতে তাঁর বাড়িতে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু সময়মতো বিষয়টি টের পেয়ে যাওয়ায় দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
সিসিটিভি ক্যামেরায় ফুটেজ দেখে তিনি দুইজনকে সনাক্ত করে তাদের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দুইজনকে আটক করে তদন্ত করছে কালিয়াচক থানার পুলিশ। পরে জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশ্য একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু ঘটনার পেছনে কার হাত রয়েছে তা নিয়ে এখনো ধন্দে রয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান সহ তাঁর স্বামী।
পঞ্চায়েত প্রধান রুমি বিবি বলেন, তৃণমূল করার জন্যই হয়তো স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতীরা তাদের উপর এভাবে হামলা চালাচ্ছে। যেহেতু এবারে সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছে তৃণমূল, সেই কারণে তাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দুষ্কৃতীরা প্রাণে মারার চেষ্টা করে থাকতে পারে। তবে এই ঘটনার পিছনে কোন দলের দুষ্কৃতীরা জড়িত রয়েছে সে ব্যাপারে পরিষ্কার করে কিছু জানাননি পঞ্চায়েত প্রধান ও তার পরিবার। তবে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
কালিয়াচক থানার পুলিশ জানিয়েছে, পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।