করোনার প্রাদুর্ভাব এবং বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় সামলে গত জুন মাসে বাংলায় বেকারত্বের হার কমেছে প্রায় ১১ শতাংশ। বেকারত্বের জাতীয় হার যেখানে ১১ শতাংশে দাঁড়িয়ে, সেখানে রাজ্যের কর্মহীনতা তার প্রায় অর্ধেক। রাজ্যের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সকালেই তিনি ট্যুইটারে দেশের সঙ্গে তুলনা টেনে এই খুশির খবর সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। ‘রোবাস্ট’ অর্থনীতির কথাও উঠে এসেছে তাঁর লেখায়। অর্থনীতির সংজ্ঞা অনুযায়ী, এটি এক শক্তিশালী আর্থিক পরিকাঠামো, যা বাজারের প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও উন্নয়নের গতি বজায় রাখতে সক্ষম।
লকডাউনে স্তব্ধ হয়ে থাকা রাজ্যের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আনলক পর্বে একদিকে অর্থনীতির মানোন্নয়ন, আর অন্যদিকে বিকল্প কর্মসংস্থান—দু’য়ের মিশেলে রাজ্যকে ঘুরে দাঁড়ানোর দিশা দিয়েছেন তিনি। জোড়া বিপর্যয় সামলে সেই কাজে যে তিনি সফল, তা স্পষ্ট সিএমআইই-র রিপোর্টে।
রিপোর্ট বলছে, গত মে মাসে বাংলায় বেকারত্বের হার ছিল ১৭.৪১ শতাংশ। জুন মাসের ৩০ দিনে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬.৫ শতাংশে। এক মাসে এই হার ১০.৯১ শতাংশ কমেছে। মে মাসে দেশের এই পরিসংখ্যান ছিল ২৩.৫ শতাংশ। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি এব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও। তাঁর কথায়, এই সাফল্য এসেছে মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পিত নানা নীতির সফল বাস্তবায়নের মধ্যে দিয়ে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, বিজেপি শাসিত হরিয়ানায় বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি, ৩৩.৬ শতাংশ। শতাংশের নিরিখে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে এই হার—ত্রিপুরায় ২১.৩, উত্তরপ্রদেশে ৯.৬, উত্তরাখণ্ডে ৮.৭, কর্ণাটকে ৯.২ এবং মধ্যপ্রদেশে ৮.২। বিজেপি জোট সরকার থাকা বিহার এবং তামিলনাড়ুতে বেকারত্বের হার যথাক্রমে ১৯.৫ এবং ১৩.৫ শতাংশ।
অর্থদপ্তর সূত্রের খবর, লকডাউন পর্বের মাঝামাঝি থেকেই দোকান, চটকল, চা বাগান, নির্মাণশিল্প সহ নানা অর্থনৈতিক উৎসকে সচল করিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জোর দিয়েছিলেন গ্রামীণ অর্থনীতিতে। ১০০ দিনের কাজ এবং ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পের সম্প্রসারণে। শুধু এই দুই ক্ষেত্র থেকেই তৈরি হয়েছে ১৫ কোটির বেশি কর্মদিবস। ঘরে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিক এবং তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে যুক্ত করেছেন প্রায় ৮ লক্ষ মানুষকে।