বাড়তে থাকা মাঙ্কিপক্সের সংখ্যা নিয়ে সতর্কতা জারি হু-এর

বিগত দু বছরের বেশি সময় ধরে করোনা সংক্রমণ তার তান্ডব চালিয়ে চলেছে গোটা বিশ্বে৷ একের পর এক ঢেউ তুলেছে দেশেও৷ নিয়ন্ত্রনে এসেও আবার বেড়েছে সংক্রমণের সংখ্যা৷ এরই মধ্যে আবার উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মাঙ্কি পক্স৷ এই রোগের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে চিন্তায় বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থা (হু)৷ বিশ্বের ২৯টি দেশে ১০০০-এর বেশি মানুষের শরীরে এই জীবাণুর হদিশ মিলেছে বলে জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আক্রান্তরা অধিকাংশই ইউরোপের বাসিন্দা৷ আক্রান্তের সংখ্যা যত বাড়ছে, ততই সতর্ক হওয়ার পরমার্শ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ যেভাবে মাঙ্কি পক্স ছড়াতে শুরু করেছে, তা নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছে হু।  

ইতিমধ্যেই বিশ্বের বেশ কিছু দেশে মাঙ্কি পক্সের সংক্রমণের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন অর্থাৎ দলগতভাবে সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করেছে বলে সতর্ক করেছে হু৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অধিকর্তা টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস একটি প্রেস বিবৃতিতে জানিয়েছে, মাঙ্কি পক্স সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের জন্য। 

ইউরোপীয় দেশগুলির মধ্যে মাঙ্কি পক্সের সবচেয়ে বেশি প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে জার্মানিতে। এছাড়া আমেরিকা, বেলজিয়াম, স্পেন, সুইডেনেও মিলেছে এই রোগের জীবানু৷ মাঙ্কি পক্স নিয়ে উদ্বেগ বাড়লেও এটা নিয়ে এখনও চিন্তার কারণ নেই বলেও আশ্বাস্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’। সেই সঙ্গে আক্রান্ত দেশগুলির উপর নজরদারি বাড়ানোর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে৷  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস অ্যাডানম গেব্রিয়েসাস জানান, মাঙ্কি পক্সের উপর নজর রাখা হচ্ছে৷ তাঁর আশঙ্কা, যেভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, তাতে আগামী দিনে এই রোগ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে৷ রাষ্ট্রসংঘের মাঙ্কি পক্স বিশেষজ্ঞ রোসামুন্ড লুইসের কথায়, ইউরোপ ও অন্যান্য দেশগুলিতে যেভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তা যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠতে পারে৷ 

মাঙ্কি পক্স নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করলেও, এখনই আশঙ্কার কারণ দেখছেন না বিজ্ঞানীরা। এই সংক্রমণ কোভিডের মতো মহামারির আকার নেবে না বলেই তাঁদের অভিমত৷ বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, মাঙ্কি পক্সের ভাইরাস SARS_COV-2- এর মতো সহজে ছড়িয়ে পড়ে না। এই রোগের নির্দিষ্ট কোনও ভ্যাকসিন না থাকলেও, গুটিবসন্ত নির্মূল করতে যে ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হয়, তা মাঙ্কি পক্সের বিরুদ্ধেও ৮৫ শতাংশ কার্যকর। এই রোগের উপসর্গ হল জ্বর৷ সেই সঙ্গে গা ব্যথা ও ফুসকুড়ি৷

সাধারণত আক্রান্তের শরীরে দুই থেকে চার সপ্তাহ এই লক্ষ্যণগুলি থাকে। তার পর নিজে থেকেই চলে যায়৷ তবে এতে মৃত্যুর আশঙ্কাও রয়েছে৷ চিকিৎসকরা বলছেন, কারও মাঙ্কি পক্স হয়েছে বলে সন্দেহ হলেই সবার আগে তাঁকে নিভৃতবাসে পাঠাতে হবে। যাতে তার থেকে অন্যদের মধ্যে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে না পারে৷ গুজরাতে এক শিশুকন্যা মাঙ্কি পক্সে সংক্রমিত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে৷ তাই ভারতেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *