উত্তর হোক বা দক্ষিণবঙ্গ, বেড়েই চলেছে হাতি-মানুষ সংঘাত। দাঁতালের হানায় ভাঙছে ঘরবাড়ি, ক্ষতি হচ্ছে ফসলের, প্রাণহানিতেও রাশ নেই। সমস্যার সমাধানে এ বার হাতির করিডর তৈরি করবে বন দফতর। শীঘ্রই জঙ্গলমহল ও উত্তরবঙ্গে এই করিডর তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এ জন্য জাপান সরকারের সংস্থা ‘জাইকা’র সঙ্গে গাঁটছড়াও বেঁধেছে রাজ্য। করিডর তৈরিতে এই সংস্থার তরফে ৬২০ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘‘দু’মাসের মধ্যে কাজ শুরু হবে। করিডর তৈরি হলে হাতি এক লাইনেই যাওয়া-আসা করবে।’’ কিন্তু হাতির দলকে কি আদৌ নির্দিষ্ট পথে চালনা করা সম্ভব— প্রশ্ন উঠছে ।যদিও বনমন্ত্রীর যুক্তি, ‘‘কেন সম্ভব নয়? হাতি চলতে শুরু করলে একই পথে চলতে থাকে। দিক বদলানো যায় না।’’ উত্তরবঙ্গে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি এই দুই জেলার মধ্যে একটি করিডর হবে। বাগডোগরা এলাকার পিছনের অংশ দিয়ে হাতিরা নেপালে চলে যায়। তাই বাগডোগরাতেও হবে করিডর। এ ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের জঙ্গলমহলে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামেও হাতির করিডর করা হবে।
কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, শুধু মাত্র ২০২০-২১ সালে হাতি-মানুষ সংঘাতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। দু’দিন আগেও ঝাড়গ্রাম শহরে হাতির হানায় প্রাণ গিয়েছে তিন জনের। অথচ হাতির হানা রুখতে নানা পরিকল্পনা হয়েছে বার বারই। কয়েক বছর আগে ঝাড়গ্রাম জেলায় এসে হাতির হানায় মৃত্যু প্রসঙ্গে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন। তার পরে ঝাড়খণ্ডের দলমা থেকে হাতির দলের আসা আটকাতে ঝাড়খণ্ড সীমানায় ৯০ কিলোমিটার পরিখা কাটা হয়েছিল এবং বৈদ্যুতিক ফেন্সিং করা হয়েছিল। কিন্তু বাকি ৪০ কিলোমিটার অংশে চাষজমি থাকায়, সেখানে কিছু করা যায়নি। আর এর ফল হয়েছে উল্টো। হাতির দল এখন ঝাড়খণ্ড থেকে চাষজমির উপর দিয়েই যাতায়াত করছে। এতে ক্ষয়ক্ষতি বেড়েছে, বেড়েছে মৃত্যুও।বনমন্ত্রী বলছেন, ‘‘নতুন করিডরে জলাধার, খাবারের ব্যবস্থা সবই থাকবে।’’