রাজ্য সরকারের তরফে বদলে গেলো সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার নিয়ম

রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল মানেই যে কেউই ভর্তি হতে পারতো এখানে৷ কিন্তু এবার থেকে পাল্টে গেলো সেই নিয়ম৷ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করাতে গেলে এবার থেকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড বাধ্যতামূলক৷ স্বাস্থ্য দফতরের তরফে এমনই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে৷ নির্দেশিকায় সাফ বলা হয়েছে, এবার থেকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করাতে গেলে স্বাস্থ্য সাথী, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য প্রকল্প, কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য প্রকল্প কিংবা ইএসআই কার্ড থাকতে হবে৷ কোনও রোগীর কাছে এর মধ্যে একটি কার্ডও যদি না থাকে, তাহলে হাসপাতাল থেকেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি করে দেওয়া হবে৷ স্বাস্থ্য দফতরের এই নির্দেশিকায় প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসার দিন শেষ?

সরকারি হাসপাতালে ভর্তির পাশাপাশি নির্দেশিকায় আর বলা হয়েছে সরকারি হাসপাতালে পিপিপি মডেলে তৈরি ডায়গনস্টিক সেন্টারে পরীক্ষা করাতে গেলেও লাগবে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড৷ কিন্তু কেন আচমকা এই নির্দেশিকা? চিকিৎসক ও তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ও রাজ্য থেকে বহু মানুষ এ রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য আসেন৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সকলকেই পরিষেবা দেবেন বলে জানিয়েছেন৷ বাংলার ১০০ শতাংশ মানুষ যাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের পরিষেবা পায়, তা নিশ্চিত করতেই এই মনিটারিং প্রক্রিয়া চালু হয়েছে৷ কিন্তু প্রশ্ন হল আমাদের রাজ্যে সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যেই পরিষেবা মেলে৷ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকার বিমা পাওয়া যায়৷ ফলে চিকিৎসক সংগঠনগুলির একাংশের প্রশ্ন, তবে কি পশ্চিমবঙ্গে বিনা মূ্ল্যে চিকিৎসার দিন শেষ? পরিবারের একজনের জন্য ৫ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেলে বাকিরা কি বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন না?

অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টর্সের সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, যবে থেকে আয়ুষ্মান ভারত ও স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু হয়েছে, তবে থেকে আমরা এই আশঙ্কাই করছিলাম যে, ধীরে ধীরে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পুরোপুরি বিমার হাতে তুলে দেওয়ার প্রচেষ্টা হবে৷ এতদিন ছিল বিনা পয়সার হাসপাতাল৷ যেখানে যে কোনও মানুষ এসে ভর্তি হতে পারতেন৷ এদিকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিয়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, কিছু বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী কার্ডকে উপেক্ষা করছে৷ কোন কোন হাসপাতাল এটা করছে? তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে৷ প্রয়োজনে লাইসেন্সও বাতিল করা হবে৷ সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালের জন্য নির্দেশিকা জারি করে স্বাস্থ্য দফতর৷ বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আওতায় চিকিৎসার জন্য ১৯০০টি প্যাকেজ রাখা হয়েছে৷ এই প্যাকেজের বাইরে চিকিৎসা করানো যাবে না৷ উল্লেখিত নয়, এমন কোনও প্যাকেজ বলে লেখা যাবে না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *