সাংস্কৃতিক জগতে দুঃখের ছায়া। গতকাল করোনা কেড়ে নিয়েছিল তবলাবাদক শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়কে, সেই ধাক্কা সামলে উঠবার আগেই বাংলার শিল্পী মহলে ফের দুঃসংবাদ। বৃহস্পতিবার ইহলোক ছেড়ে অমৃতলোকে পাড়ি দিলেন গৌরী ঘোষ। বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। বিরাট শূন্যতা তৈরি হল আবৃত্তির জগতে। মাসখানেক আগে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন এই প্রবীণ শিল্পী, এরপর অবস্থার অবনতি হয় এবং গত সাত দিন ভেন্টিলেশনেই ছিলেন তিনি। সব লড়াই শেষ করে অবশেষে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন গৌরীদেবী। তাঁর প্রয়াণে বিখ্যাত পার্থ ঘোষ-গৌরী ঘোষের জুটি ভাঙল। বিখ্যাত বাচিক শিল্পীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রবীণ শিল্পীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে লোপামুদ্রা মিত্র জানান, “মায়ের মতো মানুষ চলে গেলেন। পরিবারের একজন চলে গেলেন। মাথার উপর ছাদ ক্রমশ হারিয়ে ফেলছি। পরপর দু’দিন! খুবই কাছের মানুষ ছিলেন।”
উল্লেখ্য, পার্থ ঘোষ ও গৌরী ঘোষ আবৃত্তি জগতের অন্যতম জুটি। বাস্তব জীবনে স্বামী-স্ত্রী তাঁরা। রেডিওর উপস্থাপক হিসাবেই কাজ শুরু করেন। আকাশবাণীতে বহুদিন ধরে কাজ করেছেন। উপস্থাপনা করেছেন একাধিক অনুষ্ঠানের। আবৃত্তির বহু সিডি রয়েছে তাঁর। দমদমের এস পি মুখার্জি রোডের কাছে পুত্রসন্তানকে নিয়ে থাকতেন তিনি। কখন গৌরী ঘোষের শেষকৃত্য হবে, সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি।
পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমির সদস্য গৌরী ঘোষকে ২০১৮ সালে ‘কাজী সব্যসাচী সম্মান’ প্রদান করেছিল রাজ্য সরকার। আবৃত্তি জগতের উজ্জ্বল দুই নক্ষত্র গৌরী ঘোষ এবং পার্থ ঘোষ যাঁরা বাস্তব জীবনে ছিলেন স্বামী-স্ত্রী। রেডিয়োতে উপস্থাপক হিসাবে তাঁদের কেরিয়ার জগতের শুরু। প্রায় তিন দশক আকাশবাণীর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিন দশক স্বামী পার্থ ঘোষের সঙ্গে মিলে বহু শ্রুতিনাটক এবং জনপ্রিয় বহু শো-এর উপস্থাপনা করতে দেখা গেছে তাঁদের। তাঁদের যৌথভাবে করা শ্রুতিনাটক ‘কর্ণকুন্তি সংবাদ’ খুবই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল শ্রোতাদের কাছে। দমদমে এস পি মুখার্জি রোডের কাছে নিজের বাসস্থানে গৌরীদেবীকে আজ অল্প কিছুক্ষণের জন্য শেষ শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ পাবেন গুণগ্রাহীরা।