বিদ্যুৎ ঘাটতির পরিস্থিতিতে বড়ো ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

এই মুহূর্তে বেশ কিছুটা সামলে ওঠা গেছে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। অর্থনৈতিক দিক থেকে ভেঙে পড়া শ্রীলঙ্কার হাল ধরেছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। এরই মাঝে নতুন আতঙ্ক। তীব্র বিদ্যুত সঙ্কটে ভুগছে বাংলাদেশ। এই দুর্বিষহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সচিবালয় নির্দেশ দিয়েছে রাত আটটার পরে দোকানপাট, মলগুলি বন্ধ রাখতে। কেননা রাশিয়া বনাম ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে জ্বালানির সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের দোকানপাট বন্ধের নির্দেশকে ঘিরে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে দোকান মালিকদের সংগঠন। অভিযোগ, কোনওরকম আলোচনা না করেই সরকার একতরফাভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি বিদ্যুতের তীব্র সঙ্কটে ভুগছে ভারতের প্রতিবেশী বাংলাদেশও। শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুতের সঙ্কট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দিনে ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। বাংলাদেশও একই পথের পথিক হতে চলেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদ্যুতের সঙ্কট মোকাবিলাতে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিদিন রাত আটটার পরে দোকানপাট, শপিং মল বন্ধ রাখার জন্যে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সচিবালয়ের সূত্রে এব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। কেন এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে? এব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, সারা পৃথিবীতে জ্বালানির দাম বাড়ছে। এর জেরে পরিস্থিতি মোকাবিলাতে আগাম সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই নির্দেশ কার্যকর করার জন্যে সরকারি বিভিন্ন দফতর থেকে শুরু করে পুলিশ-প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছে, রাশিয়া বনাম ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের ফলে বিশ্ববাজারে হু-হু করে বাড়ছে অপরিশোধিত তেলের দাম। গত মার্চ মাসে ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ৬৫ ডলার। বর্তমানে ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২০ ডলার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সচিবালয় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্যে প্রতিদিন রাত আটটার পরে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্যে একদিকে দোকানপাট, মলগুলি বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও দেশজুড়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। অতিরিক্ত গরমে্র কারণে ভারতেও বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। বিশেষত ভারতের উত্তরভাগে। এক্ষেত্রে বিদ্যুতের চাহিদা রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। দৈনিক প্রয়োজন ৪০ হাজার থেকে ৪৫ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ।

সূত্রের খবর, ২০০৬ সালের বাংলাদেশ লেবার অ্যাক্ট অনুসারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সচিবালয় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্যে এই ব্যবস্থা নিয়েছে। এই নির্দেশ বাজারহাটের দোকানি কিংবা শপিং মলগুলির কর্তৃপক্ষ অমান্য করলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে্ জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের ডিরেক্টর জেনারেল (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) সূত্রে। এদিকে সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির তরফে অভিযোগ, সরকার একতরফাভাবে রাত আটটার পরে দোকানপাট বন্ধ রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দোকান মালিক সমিতির সঙ্গে আলোচনা পর্যন্ত করা হয়নি। এতে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন দোকান মালিক এবং মলগুলির কর্তৃপক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *