চলতি মাসে জোড়া ঝড়ের সংকেত ছিল আগেই। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কাকেই সত্যি প্রমাণিত করে ক্রমশ শক্তি বাড়িয়ে রুদ্র রূপ ধারণ করছে ঘূর্ণিঝড় অশনি। গত সপ্তাহেই আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের তরফ থেকে জানানো হয়েছিল সোমবার রাতের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে অশনি। সেই পূর্বাভাসকেই সত্যি প্রমাণিত করে জানা যাচ্ছে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে শুধু ঘূর্ণিঝড় নয় বরং ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে অশনি। আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই ঘূর্ণিঝড়ের অন্ধ উপকূলের কাছে পৌঁছানোর কথা। তবেই ঘূর্ণিঝড় আদৌ স্থলভাগ স্পর্শ করবে কিনা সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারছেন না আবহাওয়াবিদরা। কিন্তু অশনির জেরে সোমবার থেকে বাংলায় দুর্যোগ শুরু হবে বলে জানাল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, সাইক্লোনের প্রভাবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলোতে মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার হালকা থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার এবং বৃহস্পতিবারপূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হলেও সোমবার সকাল থেকেই কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। হাওয়া অফিসের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, স্থলভাগের যত কাছাকাছি পৌঁছাবে ঘূর্ণিঝড় অশনি ততই কলকাতাসহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টির দাপট বাড়বে।
অন্যদিকে জানা যাচ্ছে পুরি থেকে এই মুহূর্তে ৭৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে এই সাইক্লোন। বিশাখাপত্তনম থেকে ঘূর্ণিঝড়ের দূরত্ব এই মুহূর্তে ৬৪০ কিলোমিটার। দক্ষিণ-পূর্ব ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর বরাবর অগ্রসর হচ্ছে এই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়। ঘন্টায় ২১ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে অশনি। তবে ঘূর্ণিঝড় প্রসঙ্গে আবহাওয়াবিদদের দাবি, প্রচন্ড শক্তি বৃদ্ধি হয়ে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হলেও এই ঘূর্ণিঝড়ের আদৌ ল্যান্ডফোন কোথাও হবে কিনা সেই নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। পশ্চিম মধ্য ও সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ধরে উত্তর অন্ধ্র প্রদেশ ও ওড়িশা উপকূলের কাছে ১০ মে সন্ধ্যায় পৌঁছাবে এই ঝড়। এরপর তার গতিপথ বদলে উত্তর-পূর্বদিকে ওড়িশা উপকূলের কাছে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের দিকে অগ্রসর হওয়ার কথা। কিন্তু এখন থেকেই শক্তি হারাতে শুরু করেছে এই সাইক্লোন। ফলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে এটি যখন ওড়িশা উপকূলে পৌঁছবে তখন এই ঘূর্ণিঝড় শুধুমাত্র নিম্নচাপে পরিণত হবে। বাংলার উপর এর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবে উত্তাল হবে সমুদ্র এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকবে।