মুখ্যমন্ত্রী এবার পাখির চোখ দিল্লির মসনদ

তৃতীয়বার অভাবনীয় ভাবে বিপুল ভোটে জয় করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ফিরেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃতীয় বারের মতো বাংলার মসনদে ফেরা পরে দিল্লিকে পাখির চোখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। দলের নাম সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস হলেও এতদিন অন্য রাজ্যের রাজনীতি নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, এরাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য সরকার গঠন করার পর গোটাদেশে মোদী বিরোধী প্রধান মুখ তিনিই। তাই এবার জাতীয়স্তরের রাজনীতিতে গুরুত্ব বাড়াতে ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল। ২১ জুলাই দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে বার্তা দেওয়ার পর সেই মঞ্চ থেকেই একগুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা করতে চলেছেন। এর মধ্যে যেমন থাকছে ভিনরাজ্যে যাওয়ার কর্মসূচি। তেমনই থাকছে দিল্লি সফরের সময়সূচিও। বেশ কয়েকদিন সেখানে থাকতে পারেন তিনি। বিরোধী ঐক্য মজবুত করতে বিরোধীদের একজোট করে লোকসভা ভোটের লড়াইতে নামতে চান মমতা।

বাংলার বাইরে একাধিক রাজ্যে সংগঠন আরও মজবুত করাই এখন অন্যতম লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘাসফুল শিবিরের। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে গোটাদেশে বিজেপিকে হারানোর মতো একক কোনও রাজনৈতিক দল নেই। বিভিন্ন রাজ্যে কংগ্রেসের অবস্থাও বেজায় খারাপ। তাই মোদীর বিজয়রথ থামাতে প্রয়োজন মহাজোট। ২০১৯ সালে এই জোট গঠন হয়েছিল ঠিকই। তবে এই জোটের কোনও মুখ না থাকায় মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছিল। জোটের তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে কাউকে ঘোষণা করা হয়নি। জোটের দলগুলির মধ্যে ঐক্যও ছিল না সেভাবে৷ প্রত্যেকেই নিজের নীতিতে রাজনীতির ঘুঁটি সাজাচ্ছিলেন। এবার আর এক ভুল করতে চান না মমতা। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে রুখে দিয়ে তিনিই এখন মোদী বিরোধী প্রধান মুখ। তাই তিনি চান বিরোধীদের একজোট করে লড়াইতে নামতে। ২০২৪ সালের ঘুঁটি সাজিয়ে রাখতে চান এখন থেকেই।

প্রসঙ্গত চলতি মাসের ১৯তারিখ থেকে সংসদের বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে। প্রতিবারই অধিবেশন চলাকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে যান। দলের সাংসদদের তিনি যেমন নেতৃত্ব দেন তেমনই দীর্ঘ দিন নিজে সাংসদ থাকার দরুন রাজধানীতে তার যে বিরাট পরিচিত রাজনৈতিক মহল রয়েছে, তাদের সঙ্গেও তিনি জনসংযোগ করেন। দিল্লিতে বেশ ক’জন অবিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা৷ কথা বলবেন দিল্লিতে বিক্ষোভরত কৃষকদের সঙ্গেও৷ সব মিলিয়েই এবার তাঁর দিল্লি যাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। মনে করা হচ্ছে, তৃণমূল নেত্রীর প্রতিটি পদক্ষেপই এখন বিরোধী ঐক্য মজবুত করার লক্ষ্যেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *