২১ জুলাইয়ের আগেই শুরু হলো বাস ধর্মঘট

বিগত দু বছরের করোনাকাল কাটিয়ে চলতি বছর তৃণমূল কংগ্রেসের শহীদ সমাবেশ হতে চলেছে মহানগরীর বুকে। রাত পোহালেই শাসক দলের ২১ জুলাইয়ের শহীদ সমাবেশ। তার আগের দিন বুধবার রাজ্যের জেলায় জেলায় কার্যত অঘোষিত পরিবহণ ধর্মঘটের চেহারা।

দক্ষিণের এই জেলার মানুষ যেখানে মূলতঃ বেসরকারি পরিবহণ ব্যবস্থার উপর নির্ভর করেন৷ সেখানে ২১ জুলাইয়ের আগের দিন থেকেই ‘বাস তুলে নেওয়া’য় সাধারণ মানুষ চরম সমস্যায় পড়েছেন। সমস্যায় নিত্যযাত্রীরাও। ঘন্টার পর ঘন্টা বাসস্ট্যাণ্ডে দাঁড়িয়ে থাকলেও গন্তব্যে পৌঁছানোর কোন সুযোগ নেই বলে অভিযোগ।

এদিন সকালে বাঁকুড়া শহরের গোবিন্দনগর বাসস্ট্যাণ্ডে গিয়ে দেখা গেল, হাতে গোনা কয়েকটি বাস দাঁড়িয়ে আছে। কোন বাস সেভাবে রাস্তায় নামেনি। দু’দিন আগে থেকেই সোনামুখী রুটের বাস বন্ধ ছিল, আর এদিন জেলার অন্যান্য রুটের বাস গুলিও বন্ধ হয়ে গেল।

সকাল সাতটা থেকে মায়াপুরে কাজ করতে যাবেন বলে বাঁকুড়া গোবিন্দনগর বাসস্ট্যাণ্ডে বসে ছিলেন পূর্ণিমা বাউরী। বেলা দশটাতেও গন্তব্যে যাওয়ার জন্য কোন বাস পাননি বলেই তিনি জানান। বাস শ্রমিক সুদন সরকার বলেন, আরামবাগ রুটের বিষ্ণুপুর পর্যন্ত বাস চলছে।

এদিন সকাল থেকে জঙ্গল মহলের দিকে একটি মাত্র বাস গেছে। গত পরশু থেকে সোনামুখী রুটের বাস বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান। বাস বন্ধ থাকায় সমস্যায় বাসস্ট্যাণ্ডের খাবারের দোকান গুলির মালিকরাও। গোবিন্দনগর বাসস্ট্যাণ্ডেই খাবারের দোকান রয়েছে দিলীপ পালের। তিনি বলেন, মঙ্গলবার থেকেই বাস চলাচল সেভাবে করছেনা। শাসক দলের লোকেরা ‘যে যেখানে পারছে বাস আটকে দিচ্ছে’।

ফলে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়ছেন আর তাদের বিক্রি বাটাও তলানীতে ঠেকেছে বলে তিনি জানান। বাম সমর্থিত বাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা শেখ আব্দুল সেলিম বলেন, দু’-তিন আগে থেকেই তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় বাস আটকে দেওয়ার জন্যই সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ বেড়েছে।

অধিকাংশ বাস এদিন রাস্তায় নেই। বাঁকুড়া জেলা জুড়ে পরিবহ ক্ষেত্রে অঘোষিত বনধ চলছে বলে তিনি দাবি করেন।বঅন্যদিকে উল্টো সূর তৃণমূল সমর্থিত বাস শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা আশুতোষ ব্যানার্জীর গলায়। তাঁর দাবি, সব রুটেই বাস চলছে। সোনামুখী রুটে দু’-চারটে কম আছে। কোথাও কোন বাস ‘আটক করা হয়নি’, কর্মীরা কাজে যোগ দেয়নি বলেই কিছু বাস চলেনি বলে তিনি দাবি করেন।

এদিকে আগামীকাল ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যোগ দিতে দূরবর্তী জেলাগুলি থেকে এমনকি ভিন রাজ্য থেকেও তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা ইতিমধ্যেই আসতে শুরু করেছেন। মঙ্গলবারের পর আজ বুধবার সকাল থেকেও কর্মী সমর্থকেরা ট্রেন পথে হাওড়া স্টেশনে আসছেন। এরপর এখান থেকে বাসে বা লঞ্চে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন। হাওড়া স্টেশনের বাইরেই ক্যাম্প অফিস থেকে আগত কর্মীদের সহায়তা করছেন দলের স্বেচ্ছাসেবকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *