ঠিকাদার শেষাদ্রী ভুষণ সাহার বাড়ির ছাদ বাগানে যেন বসন্ত নেমে এসেছে !

শীতের আমেজ কাটিয়ে যেন একঘর বসন্ত নেমে এসেছে আলিপুরদুয়ার শহরের দুর্গা বাড়ি হাটখোলা এলাকার ঠিকাদার শেষাদ্রী ভুষণ সাহার ছাদ বাগানে। এ যেন এক অন্য মল্লিকাবন।আয়োতন মাত্র ১২০০ বর্গফুট। কিন্তু তাতে কী?সেখানেই ঠাঁই পেয়েছে ৩৫০টি চন্দ্রমল্লিকা ফুলের গাছ।আর প্রজাতিগত দিক থেকে দেখতে গেলে সংখ্যাটা ২৫০ এর উপরে। রঙবেরঙের চন্দ্রমল্লিকার বাহারে এ যেন এক স্বর্গীয় আবেস।

তবে একেবারেই বানিজ্যিক দৃষ্টিকোন থেকে ওই বাগিচার চাষ নয়।কখনও জাননি কোনো পুষ্প প্রদর্শনীর প্রতিযোগিতায়। পরিবার সূত্রেই তার এই ফুলবাগানের শখ। ছোট থেকেই তার ঝোক ছিল ফুল গাছ লাগানোতে।যদিও কাজের চাপে সেভাবে বাগান করা হয়ে ওঠেনি পেশায় ঠিকাদার শেষাদ্রী ভুষণ সাহার।বিগত তিন বছর লকডাউনের  কারণে সেভাবে কাজ না থাকায় তিনি ফুলবাগানের পরিচর্যা করতে পেরেছেন। তার ফুলবাগানের স্বপ্নকে সত্যি করতে পেরেছেন করোনা আবহের কারণেই। আর তাতেই ফুটেছে অগনিত ফুল।যার আনুমানিক সংখ্যা কয়েক লক্ষ্য। সম্পূর্ণ ছাদ জুড়ে রয়েছে হরেক রকমের চন্দ্রমল্লিকা ফুল।ছোট থেকে বড়ো বিভিন্ন রকমের চন্দ্রমল্লিকা ফুল ফুটিয়েছেন তিনি। মনের টান থেকে উঠে আসা ওই ফুলের বাহার যেমন নিজে আস্বাদ করেন, ঠিক তেমনি তার এই বাগান দেখতে উপস্থিত হচ্ছেন পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে বহু ফুলপ্রেমী। আদতে করোনাকালে লকডাউনের ২০২০ থেকে ২০২২ এর মাঝামাঝি সময়টার বিষাদ কাটাতেই ওই ঠিকাদার নিজেকে ডুবিয়ে ছিলেন ফুলের বাহারের খোঁজে। আজ তিনি একার্থে সফল। বলেন, “কর্মক্ষেত্রে যতই ব্যস্ততা আসুক না কেনো গাছ গুলোর রঙীন ফুলের মাথা দোলানো এখন জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। ছোটো বেলা থেকেই ফুল চাষের উপর একটা আত্মীক অনুভব ছিল। কিন্তু জীবন যুদ্ধ তা বাস্তবায়িত হতে দেয়নি। কিন্তু করোনার অভিশাপই যেন আশীর্বাদ হয়ে নেমে এসেছিল আমার জীবনে। ওরা যেন খিলখিল করে হেসে আমার সঙ্গে কথা বলে, আমিও বুঝি ওদের ভাষা। গ্রামা ফোন বাজিয়ে ওদের গান শোনাই। জীবনে এরথেকে বড় প্রাপ্তি আর কী-ই বা হ’তে পারে? “

 ডিউক অফ কেন্ট,  জেসি হ্যাবগুড,  পেগী অ্যান, রীতা রোভার, জেসি প্রিমরোজ, ফিল হাউটন এগুলো ইংলিশ ভ্যারাইটি কিছুদিন হলো ভারতে এসেছে। তার মধ্যেই তিনি জুটিয়ে নিয়েছেন সবাইকে।সঙ্গে পম পম ভ্যারাইটিরও অভাব নেই। আনুমানিক ৩০,০০০ টাকা করে প্রতিবছর খরচ করতে হয়েছে এই গাছের পরিচর্যায়। বর্তমানে বিভিন্ন জেলা থেকে তার এই ফুল দেখে পুষ্প প্রদর্শনী এবং ফুল কেনার জন্য ডাক আসছে, যদিও তিনি তার এই শখের গাছ বিক্রি করবেন না বলেই জানান তিনি।এক ঠিকাদারের ওই চন্দ্রমল্লিকা প্রেমের খবর এখন শহরের অন্যতম চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার এই মল্লিকা বনেই চলছে সান্ধ্যকালীন আড্ডা,ফটোশুট থেকে শুরু করে গানের আসর পর্যন্ত বসছে তার এই ছাদ বাগানে।  বর্তমানে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল তার এই একা হাতে গড়া ছাদ-বাগান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *