জল্পনা তুঙ্গে, এবার কী তবে সিবিআইয়ের পাশাপাশি ইডির কবলেও পড়বে অনুব্রত

গরুপাচার কাণ্ডে জর্জরিত রাজ্যের হেভি ওয়েট নেতা অনুব্রত মণ্ডল। এই গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হতে গ্রেফতার হওয়ার পর বর্তমানে আসানসোল জেলে রয়েছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। 

আদালতে তাঁর আইনজীবীরা বহু চেষ্টা করেও জামিনের অর্ডার নিয়ে আসতে পারেননি। পরিবর্তে অনুব্রতকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তাই প্রশ্ন, অনুব্রত জামিন কবে পেতে পারেন? সেখানে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে এখনই অনুব্রতর জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। কারণ এ বিষয়ে একাধিক সম্ভাবনা উঠে আসছে।

প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ঠিকানা কি এবার তিহাড় জেল হতে চলেছে? সেই সম্ভাবনা যথেষ্টই রয়েছে। তার কারণ গরু পাচার মামলায় এবার সক্রিয় হচ্ছে ইডি।

সিবিআইয়ের পর গরু পাচার কাণ্ডে অনুব্রত মণ্ডল এবং সায়গল হোসেনের ভূমিকা নিয়ে ইডি তৎপরতা বাড়িয়েছে বলে খবর। এই মামলায় বিপুল পরিমাণ টাকা কোথায় জমা হয়েছে তা জানতে চায় সিবিআই। সেই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডিকে।

এই অবস্থায় জেল হেফাজতে থাকা অনুব্রত মণ্ডলকে তদন্তের স্বার্থে ইডি দিল্লি নিয়ে যেতে চায় বলে সূত্রের খবর। সেক্ষেত্রে অনুব্রত মণ্ডলের ঠিকানা হতে পারে তিহাড় জেল। তবে শুধু অনুব্রত মণ্ডল নন, তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকেও দিল্লি নিয়ে যাওয়া হতে পারে।

উল্লেখ্য গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া এনামুল হককে বর্তমানে তিহাড় জেলে রাখা হয়েছে। তাই অনুব্রতকে নয়াদিল্লির নিয়ে গিয়ে তাঁদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে হলে ইডিকে আদালতের কাছে আবেদন করতে হবে।

সেই আবেদন মঞ্জুর হলে তবেই তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। সূত্রের খবর, সায়গল সম্পর্কে বিশদ তথ্য সিবিআইয়ের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন ইডি আধিকারিকরা।

গরু পাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত এনামুল হক সিবিআইয়ের মামলায় জামিন পাওয়ার পর তাঁকে দিল্লির সদর দফতরে তলব করে ইডি। সেখানে গ্রেফতার করা হয় এনামুলকে। তখন থেকে দিল্লির তিহাড় জেলেই রয়েছেন তিনি।

এই পরিস্থিতিতে ইডি চাইছে অনুব্রতকে নিজেদের হেফাজতে নিতে। আর ইডি হেফাজতের মেয়াদ পার হওয়ার পর অনুব্রতকেও তিহাড় জেলে রাখা হতে পারে বলে খবর। তবে পুরো প্রক্রিয়াটা সম্ভব হবে আদালতের অনুমতি পাওয়ার পর।

এর পাশাপাশি অনুব্রত মণ্ডলের প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকেও নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চায় ইডি। আর সেই লক্ষ্যে দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ কোর্টে ইডি আবেদন জানিয়েছে বলে খবর।

কারণ আদালতের অনুমতি ছাড়া তাঁকে হেফাজতে নেওয়া যাবে না। একই ভাবে অনুব্রতকে হেফাজতে নেওয়ার লক্ষ্যে আদালতের শরণাপন্ন হবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি। সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে খবর।

উল্লেখ্য গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত করলেও বিপুল টাকার উৎস নিয়ে সমান্তরাল তদন্ত করছে ইডি। আর সেই কারণেই অনুব্রত মণ্ডল এবং সায়গলকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে চায় তারা।

ইডি সূত্রে খবর, অনুব্রত ও সায়গলের পাশাপাশি গরু পাচারের লভ্যাংশের টাকা বীরভূম তথা রাজ্যের বহু প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে পৌঁছেছে। আর সেগুলি সম্পর্কে জানতে অনুব্রত ও সায়গলকে পৃথকভাবে এবং একসঙ্গে বসিয়ে জেরা করার প্রয়োজন রয়েছে বলে ইডি মনে করছে।

তাই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তারা। এই পরিস্থিতিতে এটা স্পষ্ট যে সিবিআই এবং ইডি যেভাবে উঠেপড়ে লেগেছে তাতে অনুব্রত মণ্ডল কবে জামিন পাবেন তা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *