দেখতে দেখতে প্রায় দু মাস অতিক্রম করে গেলো যুদ্ধ পরিস্থিতি৷ এই পরিস্থিতি প্রকাশ্যে এলো নতুন তথ্য৷ রুশ নিয়ন্ত্রাণাধীন কৃষ্ণ সাগরে রয়েছে সে দেশের গুরুত্বপূর্ণ নৌঘাঁটি৷ আর সেই নৌঘাঁটি রক্ষার দায়িত্বে রয়েছে বিশাল ডলফিন বাহিনী৷ হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। ডলফিন বাহিনীর নৌঘাঁটি পাহারা দেওয়ার সেই ছবি ইতিমধ্যেই নেটপাড়ায় ভাইরাল। আন্তর্জাতিক মহলের দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে এই অভিনব কায়দায় নিজেদের শক্তিশালী নৌঘাঁটি পাহারা দেওয়ার পন্থা নিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন৷ উপগ্রহ চিত্রের উপর ভিত্তি করে এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে মার্কিন নৌ প্রতিষ্ঠান US Naval Institute বা USNI৷
মার্কিন নৌ প্রতিষ্ঠানের দাবি, পরিকল্পনা মাফিক প্রশিক্ষিত ডলফিনবাহিনীকে দিয়ে নৌঘাঁটি রক্ষার কাজ করাচ্ছে রুশ নৌবাহিনী। তবে, রাতারাতি এখানে ডলফিন বাহিনী গড়ে ওঠেনি, বা তাদের সেখানে মোতায়েন করা হয়নি। রাশিয়ার অধীনে থাকা কৃষ্ণ সাগরে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হল সেভাস্তোপোল৷ গত ফেব্রুয়ারি মাসে সুপরিকল্পিতভাবে সেখানেই প্রথম এই ডলফিন বাহিনীকে নিয়ে আসা হয়৷ আর ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় ইউক্রেনের মাটিতে রাশিয়ার সামরিক অভিযান৷ অর্থাৎ যুদ্ধ শুরুর আগে আটঘাট বেঁধেই নিয়ে আসা হয় প্রশিক্ষিত ডলফিন বাহিনী৷ মস্কোর কাছে এটা পরিষ্কার ছিল যে, যুদ্ধ শুরু হলে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে এই নৌবন্দর৷ তাই পরিকল্পনা করেই এই কাজ করেছে মস্কো৷ USNI-এর দাবি, তাদের কাছে যে উপগ্রহ চিত্র রয়েছে, তাতে ডলফিনবাহিনীর নৌঘাঁটি পাহারা দেওয়ার ছবি স্পষ্ট৷
কিন্তু প্রশ্ন হল কেন ডলফিন বাহিনী মোতায়েন করল রাশিয়া? বর্তমানে সমুদ্রের গভীরতা মাপা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয় ‘সোনার’ সিস্টেম৷ যা অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য এবং অত্যাবশ্যকীয়৷ মূলত, শব্দতরঙ্গ এবং তার প্রতিফলনকে কাজে লাগিয়ে সেনার ব্যবস্থাপনার সাহায্যে জলের নীচে বিভিন্ন বস্তুর অবস্থান ও চরিত্র নির্ণয় করা হয়। কিন্তু, এর জন্য মানুষকে যন্ত্রের মুখাপেক্ষী। অথচ ডলফিনের মধ্যে এই ক্ষমতা রয়েছে প্রকৃতগতভাবে। আর ডলফিনের এই বিশেষ ক্ষমতাকেই কাজে লাগাচ্ছে রুশ নৌবাহিনী।
তথ্য বলছে, এই ক্ষমতাবলে একটি ডলফিন অতি সহজেই পিংপং বল এবং গল্ফ বলের পার্থক্য বুঝতে পারে! কৃষ্ণ সাগরে রুশ নৌঘাঁটির অবস্থানও তাৎপর্যপূর্ণ৷ যেখানে আকাশ পথে বা ভূমি থেকে মিসাইল নিক্ষেপ করে ইউক্রেন তা ধ্বংস করতে পারবে না। একমাত্র, জলের নীচে দিয়ে হামলা হলে রুশ নৌসেনা সমূহ বিপদে পড়বে। কিন্তু, ডলফিনবাহিনী মোতায়েন থাকায় আগেভাগেই আক্রমণের আঁচ পেয়ে যাবে তারা৷ ফলে যথাযথ নিরাপত্তা অবলম্বন করতে পারবে৷ এই ডলফিনবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়েই এখানে আনা হয়েছে৷