আগামী ২৯শে মার্চ ‘নেশামুক্ত ডুয়ার্স দিবসের ডাক দিল ডুয়ার্স দিবস উদযাপন সমিতি।২৯শে মার্চে এলেনবাড়ি থেকে কুমারগ্রাম (তিস্তা থেকে সঙ্কোশ নদী) সারা ডুয়ার্স জুড়ে নেশামুক্ত দিবস পালন করা হবে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, যোগাযোগ আরো বিভিন্ন বিষয়ে দেশের অন্যান্য অংশের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে ডুয়ার্স এলাকা।বর্তমানে গোদের ওপর বিষফোঁড়া হিসেবে দেখা দিয়েছে যুব সমাজের নেশা আসক্তি। তাই ‘গুড ফ্রাইডে’-এর জাতীয় ছুটির দিনটিকে শুভ কাজে ব্যবহার করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই সমিতি।২০১০ সাল নাগাদ যখন ডুয়ার্সের পরিস্থিতি পৃথক রাজ্যের দাবিতে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে, সে সময় ডুয়ার্সের শান্তি, প্রগতি ও উন্নতির লক্ষ্য নিয়ে ১৪ই জানুয়ারী সারা ডুয়ার্স জুড়ে ডুয়ার্স দিবস উদযাপনের শুরু হয়। বিগত ১৪ বছর ধরে এই সমিতি ডুয়ার্সের বিভিন্ন প্রান্তে এই দিনটি পালন করে চলেছে।আজ বিন্নাগুড়ির বি. ডি. এস. সি.-এর দুর্গামন্ডপে এক প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়।
এই সভায় ডুয়ার্সের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান, গণ-সংগঠন, সমাজসেবী সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। ডুয়ার্স দিবস উদযাপন সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক পার্থপ্রতিম জানান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থার সাথে মত বিনিময় করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে সংস্থাগুলি তাদের নিজ নিজ ব্যানারে এদিন নেশাবিরোধী বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, পথসভা, মিছিল বা পদযাত্রা, পথনাটিকা, আলোচনা সভা এধরনের আরো বহু কর্মসূচী নিতে চলেছে।লায়ন্স ক্লাব ইন্টারনেশন্যাল প্রাক্তন ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর শৈবাল দাশগুপ্ত এই প্রয়াসকে স্বাগত জানান। তিনি আরো বলেন, আগামী ২৯ শে মার্চ এই দিনটি যাতে ডুয়ার্সে থাকা লায়ন্স ক্লাবগুলির উদ্যোগে পালিত হয় সে বিষয়ে তিনি প্রয়াসী হবেন।জলপাইগুড়ি জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি এবং চামুর্চি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান সন্দীপ ছেত্রী জানান, এধরনের সামাজিক উদ্যোগ বড়ই প্রয়োজন। যুবক-যুবতীরাই বেশি মাত্রায় নেশা আসক্ত হয়।রাজনৈতিক ভেদভাব ভুলে সকলকে সম্মিলিত ভাবে এ কাজে এগিয়ে আসতে হবে; না হলে আমাদের আগামী দিনগুলি অন্ধকারময় হয়ে উঠতে পারে।
সভার অন্যতম আয়োজক পুকার লামা ও সভাপতি হাজি মহম্মদ গুলজার জানান- ‘যে কোন মূল্যে আমরা এই ড্রাগ ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধ করবো।’কালচিনি লাইফ ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশন-এর পক্ষ থেকে সভায় উপস্থিত ছিলেন রত্নেশ্বর মুখার্জী ও বিশ্বজিৎ ব্যানার্জী। এই সংস্থা দীর্ঘদিন ধরে নেশামুক্তি নিয়ে কাজ করে চলেছে।এ প্রসঙ্গে ধূপগুড়ি ইচ্ছেডানা সংস্থার সম্পাদক অলোক রায় বলেন, ডুয়ার্স ডে উদযাপন সমিতির এই প্রয়াস অত্যন্ত সময়োপযোগী। বিন্নাগুড়ির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক অমিয় বর্মন বলেন, শুধুমাত্র প্রশাসনিক প্রয়াসেই ডুয়ার্স থেকে নেশামুক্তি সম্ভব নয়। সব ধরনের সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে একাজে এগিয়ে আসার দরকার।এই দিনের সভায় এমন কিছু ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন যারা অতীতে প্রবলভাবে ড্রাগ আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। বর্তমানে সবকিছু কাটিয়ে আবার সমাজের বুকে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। তারা ড্রাগের নেশা থেকে বেরিয়ে আসার অনুভূতিগুলি ব্যক্ত করেন। ব্রহ্মকুমারীর উপাসক বি. কে প্রভা এদিনের সভায় নেশা মুক্তির জন্য আধ্যাত্মিক শক্তির উন্মোচন দরকার বলে জানান।অনুষ্ঠানের শেষ লগ্নে নেশা বিরোধী ভাওয়াইয়া গান দিয়ে আসর মাতান লোকশিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মী সৈয়দ নজরুল হক।