করোনা আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে নতুন উপসর্গ

পূর্বেই ঘোষিত হয়েছিল যে করোনা সংক্রমনের তৃতীয় ঢেউয়ে ছোটদের আক্রান্তের সম্ভবনা অনেক বেশি। গত দু’বার সংক্রমণের ঢেউ আছড়ে পড়লেও শিশুদের নিয়ে বাড়তি উদ্বেগ দেখা দেয়নি৷ কিন্তু এবার বড়দের পাশাপাশি সমান ভাবে আক্রান্ত হচ্ছে বাড়ির খুদেরাও৷ কোভিড স্ফীতির মধ্যে তাই বাড়তি উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে সন্তানরা৷  ২০২০ সালে যখন প্রথম কোভিডের ঢেউ আছড়ে পড়ল, তখন সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রবীণরা৷  এর পর দ্বিতীয় ঢেউয়ে ডেল্টা স্ট্রেন ভুগিয়েছে মাঝবয়সিদের৷  এবার করোনার নয়া স্ট্রেন ওমিক্রন আক্রমণ করেছে ছোটদের৷ ওমিক্রনে প্রাণহাণীর আশঙ্কা অনেকটাই কম, কিন্তু চিন্তা বাড়াচ্ছে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, করোনা মুক্তির পর বহু শিশুর মধ্যে টাইপ ১ ও টাইপ ২ ডায়াবিটিস ধরা পড়েছে। এ প্রসঙ্গে আমেরিকার ‘সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ (সিডিসি) একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে।

ইতিমধ্যেই ইউরোপে একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কোভিড থেকে সেরে ওঠার পর শিশুদের মধ্যে টাইপ ১ এবং টাইপ ২ ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে৷ কারও কারও মধ্যে তো আবার ‘ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস’ও দেখা যাচ্ছে। ‘ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস-এর ক্ষেত্রে দেখা যায় রক্তে উপস্থিত শর্করা থেকে শক্তি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় ইনসুলিন যথেষ্ট পরিমাণে তৈরি হয় না। এর ফলে শিশুর প্রাণের সংশয়ও দেখা দিতে পারে৷ 

সিডিসি জানিয়েছে, মেডিক্যাল ইনসিয়োরেন্সের নথি পরীক্ষা করে দেখা যাচ্ছে কোভিড পরবর্তী ক্ষেত্রে আমেরিকায় ১৮ বছরের কম বয়সীদের ডায়াবিটিস আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। সিডিসি-র গবেষক শ্যারন সায়াদের কথায়, ‘‘এই ভাবে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি ৩০ শতাংশ বেড়ে যাওয়া যথেষ্ট বিপজ্জনক।’’ তবে  কোভিড পরবর্তী অধ্যায়ে ডায়াবিটিস ধরা পড়লে তা মারাত্মক আকার নেবে কি না তা এখনও জানা নেই বলে জানিয়েছেন রিপোর্টের মূল লেখক সায়াদ৷ এটি সাময়িক অসুস্থতা নাকি, তা এখনও স্পষ্ট নয়।  যে সকল শিশু এখনও কোভিডের কবলে পড়েনি, তাদের মা-বাবার উদ্দেশে সায়াদের আর্জি, ‘‘সন্তানকে অবশ্যই মাস্ক পরান, আপাতত বাড়ির বাইরে পাঠাবেন না৷ পরিবারের বাইরে মেলামেশা থেকে দূরে রাখুন।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *