মারণ রোগের নাম বললে প্রথমেই মনে আসে ক্যান্সার। এই মারণ রোগে মৃত্যু হয়েছে বহু মাসনুষের। ক্যান্সারকে কাবু করতে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে প্রতিনিয়ত। এবার ভারতীয় চিকিৎসাক্ষেত্র আবারও একটি যুগান্তকারী ঘটনার সাক্ষী থাকল। জানা গিয়েছে, এবার ভারতে মিলতে চলেছে দেশে তৈরি প্রথম সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের টিকা।
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দেশজুড়ে উপলব্ধ হয়ে যাবে নতুন এই টিকাটি। সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সিইও আদর পুনাওয়ালা এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। পাশাপাশি, ভারতের বাইরেও এই টিকা পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের এই ভ্যাকসিন তৈরি স্বাভাবিকভাবেই একটি বিরাট সাফল্য। আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছেন যে, ভারতে এই ভ্যাকসিনের মূল্য ২০০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।
তবে, তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন যে, দাম এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। মূলত, এই টিকা “ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজি”-র সঙ্গে যৌথভাবে তৈরি করছে সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া।
“২০ কোটি ডোজ তৈরির প্রস্তুতি”: সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদর পুনাওয়ালার মতে, আগামী দুই বছরে এই ভ্যাকসিনের প্রায় ২০ কোটি ডোজ তৈরির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের এই “মেড ইন ইন্ডিয়া” ভ্যাকসিন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে যথেষ্ট আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়েছে।
সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের প্রথম দেশীয় ভ্যাকসিন: এই ভ্যাকসিন চলে আসার পর দেশে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অনেকটাই সহজ হবে। সর্বোপরি, দেশের চাহিদা মিটিয়ে এই টিকা বিদেশেও রফতানি করা হবে।
সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার ঠিক কি: সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার হল এমন এক ধরণের ক্যান্সার যা জরায়ুর কোষগুলিতে ঘটে। যৌন সংক্রমণের ক্ষেত্রে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV) এই ক্যান্সারের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। জানা গিয়েছে, প্রথমে ৯ থেকে ১৪ বছর বয়সী মেয়েদের এই ভ্যাকসিন দেওয়া হতে পারে।
ভ্যাকসিন এই ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করবে: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ভারতে সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। এই প্রসঙ্গে একটি প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে যে, এটি ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে হওয়া দ্বিতীয় সর্বাধিক সাধারণ ক্যান্সার।
এমতাবস্থায় সার্ভাইক্যাল ক্যান্সার প্রতিরোধে টিকা অনেকাংশে সহায়ক বলে মনে করা হয়। এমতাবস্থায়, কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় টিকাকরণ অভিযানে এই ভ্যাকসিনের অন্তর্ভুক্তি মহিলাদের সার্ভাইক্যাল ক্যান্সারের সমস্যা কমানোর লক্ষ্যে একটি দৃঢ় পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে।