বিগত দুই বছরের বেশি সময় ধরে করোনার দাপটে নাস্তানাবুদ হয়েছে গোটা বিশ্ব৷ এই করোনাভাইরাসের আতঙ্ক এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে বিশ্বের মানুষকে। ২০১৯ সালে নভেম্বরের চিনের উহান প্রদেশে যে ভাইরাসের জন্ম, তা এখন গোটা বিশ্বের কাছে ত্রাসের রূপ নিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফ থেকেও কয়েকদিন আগেও জানানো হয়েছিল করোনার হাত থেকে এখনই রেহাই মিলবে না মানবজাতির। এমতাবস্তায় করোনার দোসর হিসেবে দেখা মিলেছে মাঙ্কি পক্সের। ইতিমধ্যে বিশ্বের কয়েক হাজার মানুষ এই ভাইরাসেও আক্রান্ত হয়েছেন।
ফলে করোনার মত মাঙ্কি পক্স নিয়েও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জারি করেছে জরুরী অবস্থা। এই আবহেই এবার চিনে মাথাচাড়া দিল আরও এক নতুন ভাইরাস। জানা যাচ্ছে, চিনে সম্প্রতি পশুর শরীর থেকে ছড়াতে শুরু করেছে লাঙ্গিয়া নামে এক সংক্রামক ভাইরাস। ইতিমধ্যে এই ভাইরাসে অন্ততপক্ষে ৩৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। জানা গিয়েছে, চিনের হেনান এবং শানডং প্রদেশের বাসিন্দাদের শরীরে থাবা বসিয়েছে এই ভাইরাস।
পশুর দেহ থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয় ভাইরাসটি। তাইওয়ান সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোলের (CDC) তরফে জানানো হয়েছে, চিনের দুই প্রদেশে মোট ৩৫ জন ল্যাঙ্গিয়া হেনিপাভাইরাসে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। যাঁদের মধ্যে ২৬ জনই শুধুমাত্র ল্যাঙ্গিয়ায় সংক্রমিত। অর্থাৎ তাঁদের শরীরে এই ভাইরাসের উপসর্গও লক্ষ্য করা গিয়েছে।
কিন্তু এখন প্রশ্ন হল এই ভাইরাসের উপসর্গ কি? গবেষকদের একাংশ বলছেন, করোনা এবং মাঙ্কি পক্সের মতো এই ভাইরাসেরও প্রাথমিক উপসর্গ জ্বর, ক্লান্তি, সর্দি-কাশির মতো সমস্যা। হেনিপাভাইরাস তথা লঙ্গিয়া অনেকটা নিপা ভাইরাসের মতোই। এই ভাইরাসের সংক্রমিত হয়েছেন যারা তাঁদের প্রত্যেকেরই জ্বর, সর্দি-কাশি, খিদে না পাওয়া, পেশীতে ব্যথা, বমি বমি ভাবের মত একাধিক উপসর্গ রয়েছে।
তবে এক্ষেত্রে উদ্বেগজনক বিষয়টি হল মাঙ্কি পক্সের মত এই ভাইরাসেরও এখনো পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি। এমনকি এই রোগের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা পদ্ধতিও নেই। মূলত সেই কারণেই এই ভাইরাস নিয়ে চিনে ছড়াতে শুরু করেছে নতুন আতঙ্ক।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নিপা ভাইরাসের মতোই এই হেনিপাভাইরাস বাদুরের থেকে মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ায় এর প্রভাব বেশি পড়তে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, খাবার, পানীয় জল কিংবা পরিবেশের মাধ্যমে অন্য প্রাণীর থেকে মানুষের দেহে ছড়াতে পারে এই হেনিপাভাইরাস।