বর্ষাকাল ছাড়া ইলিশ, সত্যিই আশ্চর্য৷ অসময়ে ইলিশ দর্শন৷ নভেম্বরের শেষে বাজার ছেয়েছে রুপালি শস্যে৷ খাদ্য রসিক বাঙালি বাজারে গিয়ে একেবারে চমকে উঠেছে৷ চটপট থলেতে ভরছেন সাগরের ইলিশ৷ নভেম্বরের শেষে এমন ইলিশ আমদানি করেননি খোদ ব্যবসায়ীরাও৷ মৎস্য গবেষক ও শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনই রুপালি শস্যের ফলন বৃদ্ধির কারণ৷ এ বছর প্রচর বৃষ্টি হয়েছে৷ তাছাড়া রাজ্যের সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলে যে ছোট ইলিশ ছিল তারাই বড় হয়েছে।
মানিকতলা বাজারে এক ব্যবসায়ীর কথায়, ভরা বর্ষার মরশমে ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ছিল এখনকার দামের চেয়ে কেজি প্রতি ৩০০ টাকা বেশি৷ আর এক কেজি ওজনের ইলিশের দাম ছিল প্রায় ৪০০ টাকা বেশি৷ শীতের দোরগোড়ায় এখন ইলিশ আসছে মূলত কাকদ্বীপ, ডায়মণ্ড হারবার থেকে৷ বর্ষায় চাহিদার তুলনায় যোগান ছিল কম৷ তাই দাম ছিল বেশি৷ কিন্তু দুর্গা পুজোর পর থেকে সরস্বতী পুজো পর্যন্ত অনেকেই আবার ইলিশ খান না৷ ফলে এই সময় চাহিদাও অনেকটা কম থাকে৷ তাই দামও কম৷ তবে শুধু মানিকতলা নয়, উল্টোডাঙা, কলেজ স্ট্রিট, গড়িয়াহাট, লেক মার্কেট-সহ শহরের বিভিন্ন বাজারে গত দু’দিন ধরে ইলিশের ছড়াছড়ি৷ এক কেজির ইলিশ মাত্র ১২০০-১৩০০ টাকা৷ ৫০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ কেজি প্রতি ৭০০টাকা৷
‘দিঘা ফিশারম্যান ও ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস জানালেন, গত এক সপ্তাহ ধরে দিঘার সমুদ্র থেকে প্রতিদিন গড়ে এক টন করে ইলিশ উঠছে৷ অসময়ে এত ইলিশ আগে দেখা যায়নি। আবার ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারম্যান অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, গত দু’দিনে দিঘার থেকেও বেশি ইলিশ উঠেছে কাকদ্বীপ, ডায়মন্ডহারবার, রায়দীঘির সমুদ্র থেকে৷ তাঁর কথায়, গত তিন দিনে প্রায় সত্তর টন ইলিশ উঠেছে। বেশিরভাগ মাছের ওজন ৫০০-৭০০ গ্রাম। অসময়ে হলেও স্বাদে টেক্কা দিচ্ছে বর্ষার ইলিশকেও।