চলতি মাসে বিগত বেশ কিছুদিন ধরে একের পর এক হানা বন্দুকবাজদের হানা, এলোপাথাড়ি গুলির শিকার দেশের আম জনতা। বাদ যায়নি ছোট ছোট শিশুরাও। একের পর এক মার্কিন স্কুলে হামলা চালিয়েছে বন্দুকবাজরা। আর তাঁর জেরেই অবশেষে বহুচর্চিত আগ্নেয়াস্ত্র হিংসা বিলে স্বাক্ষর করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন সেনেটে পাশ হয়েছিল এই বিল। এরপর হাউসের চূড়ান্ত সম্মতি মেলার পরেই সেটা সাক্ষরের জন্য বাইডেনের কাছে পাঠানো হয়। সম্প্রতি সেই বিলেই সই করলেন বাইডেন। যার ফলে বিলটি পরিণত হল আইনে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরে একের পর এক বন্দুকবাজদের হানায় ইতিমধ্যেই আমেরিকায় কমপক্ষে একশো জনের মৃত্যু হয়েছে। এলোপাথাড়ি গুলির শিকার হয়েছেন নিরীহ মানুষ। এমনকী, স্কুলের ছোট্ট শিশুরাও রেহাই পায়নি বন্দুকবাজদের হাত থেকে। বারবার এই ধরনের হামলায় অধিকাংশ মার্কিন নাগরিকই আঙুল তুলেছেন আমেরিকার বন্দুক নীতির দিকে। এই পরিস্থিতিতে বহু প্রতীক্ষিত আগ্নেয়াস্ত্র বিলটি মার্কিন প্রেসিডেন্টের অনুমোদন পাওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এই বহু চর্চিত বিলে স্বাক্ষর করার সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘নিহতদের স্বজনরা, মার্কিন সরকার কিছু করবে বলে আশা করেছিলেন। আজ আমরা সেটাই করেছি।’ প্রেসিডেন্ট বাইডেন এদিন আরও বলেছেন, ‘আমি যা চাই যদিও এই বিলটি তা পুরোপুরিভাবে করতে সক্ষম হয়নি, তবে এতে এমন অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে যা আমি আগে থেকেই বলে আসছি এবং যেটি মানুষের জীবন বাঁচাতে চলেছে।’
উল্লেখ্য, এতদিন পর্যন্ত এই দেশের আগ্নেয়াস্ত্র আইনের নীতি ছিল ১৮ বছর বয়স হলেই বন্দুক কিনতে পারবেন সাধারণ মানুষ। সেই নিয়ম বদলের জন্য গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাএত শুরু করেন মার্কিন নাগরিকরা। অবিলম্বে এই নিয়ম পালটে দিক সরকার, এই দাবিতে প্রায় হাজার মানুষ মিছিল করেছেন আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তে। যেনতেনপ্রকারেণ এই ধরনের হামলার হাত থেকে মুক্তি পেতে মরিয়া হয় ওঠে সাধারণ মার্কিন নাগরিকরা। এর জেরে গত কয়েকদিন ধরে রিপাবলিকান নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেছেন ডেমোক্র্যাটরা। তারপরেই এই বিল পেশ করা হয় সেনেটে এবং সেখান তেহকে সরাসরি যায় বাইডেনের কাছে।
দেখে নেওয়া যাক নতুন এই বিল কি বলছে।
১। ২১ বছরে কম বয়সী বন্দুক ক্রেতাদের ক্ষেত্রে তাদের অতীত ভালোভাবে খতিয়ে দেখতে হবে প্রশাসনকে।
২। মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক কর্মসূচি ও স্কুলের নিরাপত্তা উন্নীত করার লক্ষ্যে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের কেন্দ্রীয় তহবিল বরাদ্দ।
৩। নিরাপদ নয় এমন মানুষদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র দূরে রাখতে ‘রেড ফ্ল্যাগ’ আইনের বাস্তবায়নের জন্য অঙ্গরাজ্যগুলোকে উদ্বুদ্ধ করতে তহবিল বরাদ্দ।
৪। অবিবাহিত সঙ্গীকে নিপীড়ন করা ব্যক্তিদের কাছে বন্দুক বিক্রি আটকে দিয়ে তথাকথিত ‘বয়ফ্রেন্ড লুপহোল’ বন্ধ করা।
যদিও প্রেসিডেন্ট বাইডেন বন্দুক আইনে আরও বড় সংস্কারের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। আধা-স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা কিংবা বন্দুক ক্রয়ের ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়সসীমা বাড়িয়ে দেওয়ার পক্ষেও ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু আপাতত সেই বিষয়ে কোনও আইন পাশ করানো হয়নি বলেই খবর।