উদ্বেগ বাড়িয়ে সর্বত্রই করোনা সংক্রমণ তার থাবা ফেলছে

বিগত এক মাসের সোসাটির পর ঊর্দ্ধমুখী করোনা সংক্রমণের সংখ্যা৷ করোনার প্রদুর্ভাব ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে৷ জেলায় জেলায় আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক, নার্সরা৷ ভাইরাস থাবা বসিয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলেও৷ সংক্রমণের জেরে হোস্টেল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷ পড়ুয়াদের হোস্টেল খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন হাসপাতালের অধ্যক্ষ৷

প্রসঙ্গত, সোমবার পর্যন্ত ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলে ৯১ জন আবাসিক চিকিৎসক ও ডাক্তারি পড়ুয়া করোনা আক্রান্ত৷ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ বাড়তে শুরু করেছে৷ করোনার আঁতুর ঘরে পরিণত হয়েছে মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেল৷ ফলে হোস্টেল বন্ধ করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না বলেই হাসপাতাল সূত্রে খবর৷ হাসপাতালের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, যে সকল পড়ুয়া এখনও হোস্টেলে রয়ে গিয়েছেন তাঁরা যেন হোস্টেল খালি করে দেন৷ আবাসিকদের সরিয়ে হোস্টেল স্যানিটাইজ করা হবে৷ 

এদিকে গত তিনদিনে কলকাতা মেডিক্যালে মোট আক্রান্ত ১৬০ জন৷ ডিন, চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীসহ লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ৷ কী ভাবে চলবে চিকিৎসা পরিষেবা? চিন্তার ভাঁজ কর্তৃপক্ষের কপালে৷ বারুইপুরেও চিকিৎসক নার্স সহ ১০ জন সংক্রমিত৷ 

কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, এই মুহূর্তে পরিষেবা ব্যাহত না হলেও, এই ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে তা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য ভবনের কাছ থেকে পরামর্শ চাওয়া হয়েছে৷ আগামী দিন আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা৷ প্রসঙ্গত, ডিন ছাড়াও আক্রান্ত ৪০ জন চিকিৎসক, জুনিয়র ডাক্তার, নার্সিং স্টাফ, পড়ুয়া এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ হোস্টেলের পড়ুয়াদের বাড়ি যেতে বলা হয়েছে৷ কিন্তু কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পড়ুয়াদের বাড়ি যেতে বলা হলেও তাঁরা হোস্টেল ছাড়ছেন না৷ আক্রান্তদের উপসর্গ মৃদু বলে জানা গিয়েছে৷ এদিকে ডিন আক্রান্ত হওয়ার পরেই গতকাল তাঁর সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে পরীক্ষার জন্য৷ 

পাশাপাশি চিত্তরঞ্জন সেবা সদনের পরিষেবাও নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে৷ অন্য হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক এনে কী ভাবে পরিষেবা স্বাভাবিক করা যায়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে৷ এদিকে, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েও করোনা আক্রান্ত পোলবা নার্সিং হোমের চিকিৎসক ও নার্স৷ ৩ জন নার্সিং স্টাফ ও ১ জন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত৷ উল্লেখ্য বিষয় হল মুখের স্বাদ থাকলেও তাঁদের জ্বর, সর্দি, মাথা যন্ত্রণা রয়েছে বলে জানিয়েছেন পোলবা হাসপাতালের বিএমওএইচ কৌশিক মণ্ডল৷ তাঁরা কেউই হাসপাতালে ভর্তি হননি৷ সকলে রয়েছেন হোম  আইসোলেশনে৷ উদ্বেগের বিষয় হল, ডবল ডোজ নেওয়ার পরেও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা৷ এই মুহূর্তে পোলবা ব্লক এলাকায় ১৬ জনেরও বেশি করোনা আক্রান্ত রয়েছেন৷ 

অন্যদিকে, আসানসোল হাসপাতালে আরটিপিসিআর টেস্ট ল্যাবেও থাবা বসিয়েছে করোনা৷ আক্রান্ত হয়েছেন দুই চিকিৎসক সহ ১০ জন৷ আক্রান্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরের তিন কর্মী৷ যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যহত হতে পারে বলে জানাচ্ছেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক৷ সিএমওএইচ জানাচ্ছেন, ২৯ ডিসেম্বরের পর থেকে বর্ধমান জেলা জুড়ে যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, তা রীতিমতো উদ্বেগের৷ এক ধাক্কায় ৬ গুণ বেড়ে গিয়েছে সংক্রমণ৷ জেলা হাসাপতাল ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরের বসেছে করোনার থাবা৷ করোনা থাবা বসিয়েছে উত্তরবঙ্গে মেডিক্যাল কলেজেও৷ ১৪ জন ডাক্তারি পড়ুয়া করোনা পজেটিভ৷ আক্রান্ত ৩ জন নার্সও৷ সকলেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *