গত দেড় বছরের মধ্যে দেশে ফিরেছেন দেড় হাজারের কাছাকাছি পাক হিন্দু

ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার চেষ্টা, কিন্তু ব্যর্থ হচ্ছে বহু। যত দিন যাচ্ছে ততই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই কাঁটাতার পেরিয়েছিলেন হাজার হাজার পাকিস্তানি হিন্দু। কিন্তু জায়গা হল না এপারেও।

কারন নাগরিকত্ব পাওয়ার কড়া পরীক্ষায় পাস করতে পারছেন না অনেকেই। আর তাই গত ১৮ মাসে ফের পাকিস্তানি ফিরতে বাধ্য হলেন ১৫০০-এরও বেশি পাক হিন্দু। সম্প্রতি সামনে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ভারত-পাক সীমান্তের অরাজনৈতিক সংগঠন সীমান্ত লোক সংগঠন-এর প্রেসিডেন্ট হিন্দু সিং সোধা জানিয়েছেন, ২০২১ সালে থেকে এখনওপর্যন্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের ১৫০০ মানুষ পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছেন।

রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে এদের ফিরে যেতে হল। কারণ নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য যেসব নিয়মকানুনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তা করার মতো টাকাপয়সা ওদের কাছে ছিল না।

প্রসঙ্গত, রাজস্থানসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিগত কয়েক বছরে আশ্রয় নিয়েছেন একাধিক পাক হিন্দু। কিন্তু আশ্রয় নিলেও এখনো পর্যন্ত এদেশের নাগরিকত্ব পাননি তারা। তাদের অভিযোগ, নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করার পর বহু মাস কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত সরকারি তরফে তাদের ভারতের নাগরিক হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। মাঝে কেটে গিয়েছে ১০ থেকে ১৫ বছর।

কিন্তু তারপরেও তারা এখনো ভারতের স্বীকৃত নাগরিক নন। সম্প্রতি রাজস্থান সীমান্তে এমনই আড়াই হাজার পাক হিন্দুর খোঁজ মিলেছে যারা দীর্ঘ ১০-১৫ বছর ধরে অপেক্ষা করছেন ভারতের নাগরিক হওয়ার।

উল্লেখ্য ২০০৪ এবং ২০০৫ সালে ক্যাম্প করে প্রায় ১৩ হাজার পাক হিন্দুকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরে যত সময় পেরিয়েছে ততই কমেছে নাগরিকত্ব দেওয়ার সংখ্যা। জানা যাচ্ছে গত পাঁচ বছরে নাগরিকত্ব দেওয়া হয়েছে মাত্র ৫ হাজার পাকিস্তানিকে। 

উল্লেখ্য, পাকিস্তান থেকে আসা এই সমস্ত সংখ্যালঘুদের ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য প্রচুর ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়। প্রথমত তাদের পাক পাসপোর্ট থাকতে হবে। সেই পাসপোর্ট জমা দিয়ে নিতে হবে সারেন্ডার সার্টিফিকেট। তা দেখিয়ে ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আবেদন করতে হবে।

এর সঙ্গেই আবার ভারতীয় নাগরিকত্ব নেওয়ার জন্য ও পাসপোর্ট সারেন্ডারের জন্য যে ফি জমা দিতে হয় তা ওইসব পাক হিন্দু উদ্ধাস্তুদের পক্ষে মেটানো মুসকিল। পাসপোর্ট রিনিউ করতে পাক সরকার নিচ্ছে ৮ হাজার টাকা। ওই টাকা দেওয়া অনেকের পক্ষেই কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

এদিকে আবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যাচ্ছে, ২০২১ সাল পর্যন্ত ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্যে আবেদন জমা পড়েছে ১০ হাজারের বেশি। এদের সিংহভাগই পাকিস্থান থেকে। যত দিন যাচ্ছে আবেদনের সংখ্যাও তত উত্তরোত্তর বাড়ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবে অধিকাংশকেই নাগরিকত্ব দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *