বেসরকারি হাসপাতালের পর এবার বেসরকারি স্কুলেও হস্তক্ষেপের চিন্তাভাবনা রাজ্য সরকারের তরফে

এবার রাজ্য সরকারের তরফে অভিনব উদ্যোগ। বেসরকারি হাসপাতালের একাংশের বিরুদ্ধে লাগাম ছাড়া বিল করার অভিযোগ বহুদিন ধরেই রয়েছে। বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে রোগীর সাধারণ চিকিৎসার পরেও ৪-৫ দিনে বিলের অঙ্ক চার-পাঁচ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে। অতিমারি করোনা পরিস্থিতিতে সেই অভিযোগের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়।

এরপরই নড়েচড়ে বসে রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। বহু বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয় কমিশন। এবার সেই পথে হেঁটে রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে রাজ্য। যা অভিনব বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

কারণ বেসরকারি হাসপাতালের মতো বেসরকারি স্কুলের বিরুদ্ধেও ফি সংক্রান্ত প্রচুর অভিযোগ রয়েছে। স্কুল ফি-সহ বিভিন্ন খাতে খরচ সংক্রান্ত বিষয়ের পাশাপাশি পরিচালন ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে অভিভাবকদের। এবার বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা কমিশন গঠন করতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কমিশনের মাধ্যমে যাবতীয় অভিযোগের সুরাহা হবে, সেই লক্ষ্যেই কমিশন গড়া হবে।

রাজ্য বিধানসভার বাদল অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এই বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেক্ষেত্রে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে শিক্ষা কমিশনের মাথায় রাখা হবে। সঙ্গে থাকবেন রাজ্য সরকার মনোনীত শিক্ষা জগতের প্রতিনিধিরা। ইতিমধ্যেই রাজ্য মন্ত্রিসভা এ ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছে বলে খবর। এ বিষয়ে শীঘ্রই বিজ্ঞপ্তি জারি হবে বলে বিকাশ ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে।

বেসরকারি স্কুলগুলিতে পড়াশোনার খরচ দিন দিন বাড়ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে খরচ করতে হচ্ছে অভিভাবকদের। ফি বৃদ্ধি নিয়ে স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ লেগেই রয়েছে। এই ইস্যুতে অভিভাবকরা সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির সামনে বহুবার বিক্ষোভ পর্যন্ত দেখিয়েছেন। তাই এই সমস্ত সমস্যা মেটানোর লক্ষ্যেই শিক্ষা কমিশন গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য।

উল্লেখ্য করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর স্কুল খুলতে শুরু করে। তখন বহু বেসরকারি স্কুল ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যা নিয়ে অভিভাবকরা তুমুল বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। বিক্ষোভ থামাতে বহু জায়গায় পুলিশকে হস্তক্ষেপ পর্যন্ত করতে হয়েছিল। একটা সময় বিষয়টি আদালতে গিয়ে পৌঁছয়।

সেই সময় রাজ্য সরকার শিক্ষা কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়। এ সম্পর্কে শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে স্বাস্থ্য কমিশন যেমন কাজ করে, শিক্ষা কমিশনও সেই ধাঁচেই কাজ করবে। কমিশন তৈরির কথা আগেই ঘোষণা হয়েছিল, এবার তা বাস্তবায়নের পথে।

এই ব্যবস্থায় সমস্যা অনেকটাই মিটবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। শিক্ষা কমিশন গঠন রাজ্য সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলেই মনে করা হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই এতে চাপে পড়ে যাবে বেসরকারি স্কুলগুলি। রাজ্য সরকারের এহেন সিদ্ধান্তের পরে আগামী দিনে বেসরকারি স্কুলগুলি নতুন করে জোটবদ্ধ হয়ে এই ফি বৃদ্ধি তথা পরিচলন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নতুন কোনও পদক্ষেপ করে কিনা সেটাই এখন দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *