জল সংরক্ষণের জন্য ৯৮টি ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার: মুখ্যমন্ত্রী

আগামী কয়েক বছরে চাষযোগ্য জমির ৮০% সেচ কভারেজ অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ত্রিপুরা সরকার। এর পাশাপাশি বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এরমধ্যে রয়েছে ৪৩টি বন্যা সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও নদীর তীরবর্তী এলাকা রক্ষণাবেক্ষণ করা। মঙ্গলবার রাজস্থানের উদয়পুরে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় অল ইন্ডিয়া স্টেট ওয়াটার মিনিস্টার্স কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।

কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের অধীন জাতীয় জল মিশনের উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, আমি এই সম্মেলনে অংশ নিতে পেরে খুবই আনন্দিত। আমাদের ত্রিপুরা রাজ্য দেশের মধ্যে তৃতীয় ক্ষুদ্রতম রাজ্য। যা ১০,৪৯১ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। এটা বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চল, যা ৭০ শতাংশ বনভূমি নিয়ে বিস্তৃত। মূলত, এখানকার অধিকাংশ মানুষ জীবনজীবিকার জন্য কৃষির উপর নির্ভরশীল। দ্রুত প্রবাহিত নদী ও সীমিত জল সঞ্চয় করার সুযোগের কারণে রাজ্যে জল-ভিত্তিক সেচ প্রকল্পের খুব কম সুযোগ রয়েছে। তাই কৃষি ক্ষেত্রের অধিক উন্নয়ন ও কৃষকদের আর্থিক অবস্থার মানোন্নয়নে উন্নত সেচ ব্যবস্থার উপর জোর দিয়েছে ত্রিপুরা সরকার। মোট ভৌগোলিক এলাকার নিরিখে ত্রিপুরায় চাষযোগ্য জমি রয়েছে ২৫ শতাংশ।

 এখন পর্যন্ত চাষযোগ্য জমির জন্য ৪৭ শতাংশের মতো সেচ ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা কয়েক বছরের মধ্যে চাষযোগ্য জমিতে ৮০ শতাংশ সেচ ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছি। সেচের জন্য প্রয়োজনীয় জলের ব্যবস্থাপনা করার জন্য বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করা, ছোট ছোট বাঁধ নির্মাণ করা ইত্যাদি ব্যবস্থাপনায় জোর দিয়েছে সরকার। আমরা ৯৮টি ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় জায়গা চিহ্নিত করেছি, যা ৩০ হাজার হেক্টর জমিকে কভার করবে। এজন্য ১৪টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ত্রিপুরায় ভূগর্ভস্থ জলের ভাণ্ডার রয়েছে। দীর্ঘ বর্ষাকাল ও বিস্তৃত বনাঞ্চল থাকায় আমাদের রাজ্যে প্রচুর ভূগর্ভস্থ জলের সংস্থান রয়েছে। আমরা জাতীয় গড়ের তুলনায় ভূগর্ভস্থ জলের মাত্র ৯.৪৮% ব্যবহার করি। সেচ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা ও পানীয়জলের সমস্যা নিরসনে ডিপ টিউবওয়েল স্থাপনে জোর দেওয়া হয়েছে। জল শক্তি অভিযান সূচনা হওয়ার পর থেকে বৃষ্টির জল ধরে রাখা, বার্ষিক নিষ্কাশনযোগ্য ভূগর্ভস্থ জলের সম্পদ ২০২৩ সালে ১.০৬৩ বিলিয়ন কিউবিক মিটার থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে ১.১৮ বিলিয়ন কিউবিক মিটার হয়েছে। রাজ্য সরকার জল সংরক্ষণ, বৃষ্টির জল সংগ্রহ, পুরনো জলাশয় সংস্কার, ওয়াটারশেড উন্নয়ন সহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।