‘হাতি প্রবণ’ এলাকা হিসেবেই পরিচিত বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের বড়জোড়া ও বেলিয়াতোড় রেঞ্জ এলাকা। এখানকার জঙ্গলে বেশ কিছু ‘আবাসিক হাতি’ রয়েছে, পাশাপাশি প্রায় বছরভর ‘পরিযায়ী হাতি’র আনাগোনা লেগেই থাকে। ওই সব হাতির দল প্রায়শই খাবারের সন্ধানে জঙ্গল লাগোয়া গ্রাম গুলিতে ঢুকে পড়ে। ফলে এই সমস্ত এলাকায় সম্পত্তি হানির, কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি জীবনহানির ঘটনাও ঘটেছে। এই অবস্থায় জঙ্গলের মধ্যেই পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করে সেখানেই হাতির দলগুলিকে আটকে রাখার এই বিশেষ উদ্যোগ বনদপ্তরের তরফে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, উত্তর বঙ্গ থেকে আনা হয়েছে হাতিদের অতিব পছন্দের এক ধরণের ঘাস। সেই ঘাস দক্ষিণের বঙ্গের এই এলাকায় রোপনের পাশাপাশি ডুমুর, কলা, কাঁঠালের মতো সুস্বাদু ফলের গাছও লাগানো হচ্ছে। জঙ্গলের মধ্যেই খাদ্যের চাহিদা মিটে গেলে লোকালয়ে হাতির আনাগোনা কমবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বনদপ্তরের এই উদ্যোগে খুশি বড়জোড়া-বেলিয়াতোড় রেঞ্জ এলাকার মানুষও। স্থানীয় ধনীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা গৌতম কারক বলেন, এভাবে জঙ্গলের মধ্যেই হাতিদের খাবারের ব্যবস্থা থাকলে আশা করি হাতির আক্রমণ কিছুটা হলেও কমবে। আর তা যদি হয় তবে তারা অনেকখানি নিশ্চিন্ত হবেন বলে তিনি জানান।
বনদপ্তরের বেলিয়াতোড় রেঞ্জের বনাধিকারিক মহিবুল ইসলাম এপ্রসঙ্গে বলেন, মূলত হাতিদের খাবারের যোগান দিতে ৪০ হেক্টর জমিতে বিশেষ ধরণের ঘাস লাগানো হচ্ছে। পর্যাপ্ত খাবারের যোগান জঙ্গলের মধ্যেই পেলে লোকালয়ে তারা যাবেনা। এর পাশাপাশি অর্থকরী এই ফসল নানান কাজে ব্যবহার করা হয়। ফলে একদিকে হাতি সমস্যার সমাধান, অন্যদিকে এই ঘাস চাষের মাধ্যমে বনসুরক্ষা কমিটি গুলি ও সরকার দু'পক্ষই আর্থিকভাবে লাভবান হবেন বলে তিনি জানান।