দেশে এই মুহূর্তে বিতর্ক চলছে কুতুব মিনার নিয়ে। বিতর্কিত এই সময়ের মাঝেই কেন্দ্র সরকারের তরফে এলো নতুন নির্দেশিকা। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পাশে অবস্থিত জ্ঞানবাপী মসজিদের বিতর্ক নিয়ে যখন একটু একটু করে চড়ছে উত্তেজনার পারদ, তখনই প্রকাশ্যে এল কুতুব মিনার নিয়ে কেন্দ্রের নির্দেশ। সাম্প্রতিক খবর অনুসারে জানা যাচ্ছে, কুতুব মিনার অঞ্চলের মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে ভারত সরকার। শনিবারই ওই অঞ্চল পরিদর্শনে যান সংস্কৃতি মন্ত্রকের সচিব গোবিন্দ মোহনসহ ১২ জনের একটি বিশেষ দল।
জানা যাচ্ছে, পরিদর্শন শেষে তথ্যসচিব ওই এলাকার মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ওই চত্বরে যেসব মূর্তি পাওয়া গেছে তারও আইকনোগ্রফি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর। এই খবর প্রকাশে আসতেই দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক, আলোচনা। কিন্তু এর কিছুক্ষন পরেই কুতুবমিনার প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী জি কে রেড্ডি জানালেন, এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
জানা যাচ্ছে শনিবার ওই এলাকা পরিদর্শনে যে দলটি গিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে ছিলেন তিনজন ইতিহাসবিদ, চারজন আইএসআই আধিকারিক এবং কয়েকজন গবেষক। রবিবার সকালে খবর মেলে কুতুব মিনারের দক্ষিণ দিক থেকে খোঁড়ার কাজ শুরু করা হবে এবং এই সমগ্র খননকার্যটি হবে মিনার থেকে প্রায় ১৫ মিটার দূরে। তবে ঠিক কতদিন পর্যন্ত এই খনন কাজ চলবে এবং কত দিনের মধ্যে তার রিপোর্ট পেশ করতে হবে সে বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত ১৯৯১ সালের পর এই প্রথম কুতুব মিনার চত্বরে কোনও খনন কাজ চালানো হবে বলে খবর।
উল্লেখ্য কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের পাশে অবস্থিত জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্ক এবং সমীক্ষা নিয়ে যখন কার্যত উত্তাল দেশ ঠিক তখনই আইএসআইয়ের প্রাক্তন আধিকারিক ধরমবির শর্মা কুতুব মিনার প্রসঙ্গে বলেন, কুতুব মিনার নাকি তৈরি হয়েছিল রাজা বিক্রমাদিত্যের আমলে। সূর্যের আলোর দিক নির্ধারণ করার জন্যই এই মিনার বানিয়েছিলেন রাজা বিক্রমাদিত্য। এছাড়া ওই চত্বর থেকে বেশ কয়েকটি কৃষ্ণ, গণেশসহ বহু দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া গিয়েছে। এরপরেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদ দাবি জানায় যে কুতুব মিনারের নাম পরিবর্তন করে বিষ্ণু স্তম্ভ রাখা হোক।
তারা আরও জানিয়েছিল যে প্রায় ২৭টি হিন্দু মন্দির ধ্বংস করে নাকি ওই কুতুব মিনার তৈরি হয়েছে। ফলে আইএসআইকে কুতুবমিনার এলাকার মাটি খুঁড়ে অনুসন্ধান চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয় বলে খবর। এই খনন সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যও সামনে আসে। কিন্তু এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানালেন, এখনও পর্যন্ত কুতুব মিনার প্রাঙ্গণে খননকার্য হবে কিনা কিংবা আইএসআই আধিকারিকরা এই বিষয়টি অনুসন্ধান করবেন কিনা তা নিয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ফলে ইতিমধ্যেই কুতুব মিনারকে কেন্দ্র করেও মাথাচাড়া দিয়েছে নতুন বিতর্ক।