তিনি নেই৷ অথচ আজও ভীষণভাবেই রয়েছেন৷ রাজ্যের ইতিহাসে তার মতো আর কেউ নেই৷ তার মতো এতো বছর টানা কেউ মুখ্যমন্ত্রী হননি৷ একটানা ২৩ বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। কথা হচ্ছে সিপিএমের প্রবাদ প্রতিম নেতা ও রাজ্যের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর। আজ জ্যোতি বসুর ১০৮ তম জন্মদিন৷ বিধানসভার প্রতিটি ইঞ্চিতে আজও তাঁর ছোঁয়া টের পাওয়া যায়৷ অথচ নিয়তির পরিহাস এমনই তাঁর মৃত্যুর এক যুগেরও কম সময়ে বামশূন্য হয়েছে বিধানসভা। বাংলার পরিষদীয় রাজনীতির ইতিহাসে এই প্রথমবার। বিধানসভায় বাম-কংগ্রেস বিধায়ক নেই। ফলে বিধানসভার অলিন্দে সেই অর্থে কোনও কমরেডের দেখা মিলল না এদিন৷ প্রসঙ্গত, একুশের ভোটযুদ্ধে একটি আসনও পায়নি বামেরা।
এই পরিস্থিতিতে অনাড়ম্বরভাবে পালিত হল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর জন্মবার্ষিকী। তাঁর ছবিতে শ্রদ্ধা জানালেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ অন্যান্য বিধায়করা। জোট সঙ্গী হিসেবে বিধানসভায় তাঁর ছবিতে মালা মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানালেন বাম কংগ্রেস আইএসএফ জোটের একমাত্র প্রতিনিধি, ভাঙরের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। শ্রদ্ধা জানালেন পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। জ্যোতি বসুর মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন বঙ্কিম ঘোষ এবং পরেশ অধিকারী। এবারের বিধানসভাও রয়েছেন তাঁরা। তবে জার্সি বদলেছেন দু’জনই। বঙ্কিমবাবু এখন বিজেপি বিধায়ক আর পরেশবাবু তৃণমূলে। এদিন তাঁরাও শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ছিলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রও। তবে এদিন বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জ্যোতি বসুর চলে যাওয়াটা বাম রাজনীতির অন্দরে যে ব্ল্যাক হোল তৈরি করেছিল তার মাশুলই আজও গুনতে হচ্ছে সিপিএমকে, এমনটাই বলেন অনেকে। ধাক্কা খেতে খেতে আজ বিধানসভায় বামেরা কোথাও নেই। শূন্য দালান, প্রশস্ত বারান্দা তবু বলে যায়, তিনি আছেন, আছেনই। তাঁর চেয়েও দীর্ঘতর তাঁর ছায়া।