সমবয়সী চার নাবালিকাকে গভীর রাতে উদ্ধার করলো পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে মালদা শহরের প্রাণকেন্দ্র রথবাড়ি এলাকায়। ওই এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ফুটপাতে বসেছিল ওই চার নাবালিকা। তাদের দেখে সন্দেহ হয় কিছু মানুষের। এরপরই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। ওই নাবালিকাদের প্রাথমিক নাম পরিচয় জানার পর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার সকালে ওই নাবালিকাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। এরপর আদালতের নির্দেশ মেনে ওই চার নাবালিকাকে তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ওই নাবালিকাদের বয়স ৮ থেকে ৯ বছর। তারা প্রত্যেকেই কালিয়াচক থানার হারুচক এলাকার বাসিন্দা। সংশ্লিষ্ট এলাকার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত ওই চার নাবালিকা। ঘটনা সুত্রে ওই চার নাবালিকা একে অপরের বন্ধু এবং তাদের প্রত্যেকের মামার বাড়ি মোথাবাড়ি থানা এলাকায়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই চার নাবালিকারা হঠাৎই একটি ছোট লরিতে চেপে বসে মোথাবাড়ি যাওয়ার জন্য। কিন্তু সেই লরিটি মালদা শহরে চলে আসে। এরপর ওই নাবালিকাদের জাতীয় সড়কের ধারে নামিয়ে দেওয়া হয়়। তারপরে লরিটি চলে যায়। সেখানে আচমকাই একজন অচেনা ব্যক্তি ওই চার নাবালিকাকে দেখে সন্দেহ করে ঘোরাফেরা করতে থাকে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে রথবাড়ি এলাকায় অবস্থিত মিনি ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের কয়েকজন সদস্যদের ওই চারজন নাবালিকাকে দেখে সন্দেহ হয়। তারপর তারা ওই নাবালিকাদের সঙ্গে কথা বলতেই বাড়ি ছেড়ে আসার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর এই খবর দেওয়া হয় ইংরেজবাজার থানায়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নাবালিকারা পুলিশকে জানিয়েছে, লকডাউনের জন্য তারা মামার বাড়িতে ঘুরতে যেতে পারছিল না। যেহেতু স্কুল বন্ধ, তাই চার বন্ধু মিলে পরিকল্পনা করেছিল তাদের মামার বাড়ি যাওয়ার। সেই মতোই কালিয়াচক স্ট্যান্ড থেকে একটি ছোট লরিতে তারা উঠে বসে। কিন্তু সেই লরিটি মোথাবাড়ি না গিয়ে মালদা শহরে চলে আসে। শহরের রথবাড়ি এলাকায় ওদের নামিয়ে দেওয়া হয়। গভীর রাতে তারা রাস্তার ধারে বসেছিল। একজন ব্যক্তি এসে তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছিল। এরই মধ্যে কয়েকজন “কাকুরা” তাদেরকে উদ্ধার করেছে বলে নাবালিকারা জানিয়েছে।
মালদা মিনি ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য কালু শেখ বলেন, “ওই নাবালিকাদের বয়স ৮ থেকে ৯ বছরের মধ্যে। ওদের রাতে রথবাড়ি এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। এরপর আমাদের অফিসে নিয়ে এসে বসিয়ে বিস্কুট খাওয়াই। তারপর একে একে বাড়ির ঠিকানা জানতে পারি। বাড়িতে খবর দেওয়া হয় পাশাপাশি ইংলিশবাজার থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে।”
পুলিশ জানিয়েছে , এই ঘটনার পিছনে কোন পাচার চক্র জড়িত রয়েছে কিনা সেটিও খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ওই নাবালিকাদের কাছ থেকে তাদের নাম ও পরিচয় জানার পর বুধবার দুপুরে ওদেরকে তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।