রাস্তায় যানজট বাঁধানোর অভিযোগ মালদার এক নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে

৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশ দখল করে বেআইনিভাবে বালি, পাথর ফেলে রেখে রাস্তায় যানজট বাঁধানোর অভিযোগ উঠলো সংশ্লিষ্ট এলাকার এক নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এই ঘটনার জেরে চরম সমস্যায় পড়তে হয় বিভিন্ন যানবাহন ও সাধারণ মানুষকে। ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার থানার গাবগাছি এলাকায়। এমনকি রাস্তার জাতীয় সড়কের একাংশ দখল করেই বড় বড় ডাম্পার গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার জেরে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকতে হয় দূরপাল্লার বিভিন্ন যানবাহন থেকে সাধারণ মানুষকে। 

এদিন সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে যাওয়ার পর ক্ষোভ বিক্ষোভ শুরু হতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জেলা ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ এলাকা থেকে সরে পরে। জেলা ট্রাফিক পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পাশাপাশি বেআইনিভাবে পার্কিং এবং জাতীয় সড়কের একাংশ জুড়ে পাথর, বালি ফেলার ঘটনা নিয়ে জেলা ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযোগ হয়েছে ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে । 

যদিও এ ব্যাপারে ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের এক কর্তা বিকাশ দাস জানিয়েছেন, “এই বালি, পাথরগুলি আমার নয়। যদি কিছু বলার থাকে অফিসে এসে কথা বলুন।” এরপরে আর তার দেখা পাওয়া যায় নি। 

গাবগাছি এলাকায় একটি বেসরকারি হোটেলের বিপরীতে রয়েছে ওই নার্সিংহোমটি। সেখানেই নার্সিংহোমের আরও একটি নতুন ভবন তৈরি হচ্ছে। যেটি জলা জমি ভরাট করে করা হচ্ছে বলেও আগে থেকে বিস্তর অভিযোগ উঠে আসছে। আর সেই নতুন ভবন তৈরীর ক্ষেত্রে ওই এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি অংশজুড়ে যত্রতত্র বেআইনি বালি, পাথর ফেলে রাস্তা দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি সারি সারি লরি ও বালি পাথর নিয়ে রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকছে। যেগুলি ওই নার্সিংহোমে নতুন ভবন তৈরির কাজের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে আর এনিয়ে চরম যানজট তৈরি হচ্ছে গাবগাছি এলাকার জাতীয় সড়কে।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ওই এলাকার জাতীয় সড়কের একটি অংশজুড়ে বালি , পাথর ফেলে রাখায় ব্যাপক যানজটের পরিস্থিতি তৈরি হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে বিভিন্ন যানবাহন। গাবগাছি থেকে শুরু হওয়া সেই যানজট রথবাড়ি এলাকা পর্যন্ত পৌঁছে যায় । এই পরিস্থিতি দেখেই ওই এলাকায় তদারকিতে যায় জেলা ট্রাফিক পুলিশের ওসি সহ অন্যান্যরা অফিসারেরা। পুলিশের অভিযান দেখেই লরি চালক গা-ঢাকা দেয়। মুখে কুলুপ এঁটেছে ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। এরপরই প্রয়োজনীয় তদন্তের কথা বলা হয় ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে।

এদিকে যানজটে আটকে পড়া ক্ষিপ্ত বাসিন্দাদের অভিযোগ, গাবগাছি এলাকায় একটি বেসরকারি হোটেলের পাশে বেআইনিভাবে জলা জমি ভরাট করে স্থানীয় এলাকার একটি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ তাদের ভবন নির্মাণ করছে। আর তার জন্যই জাতীয় সড়কের একটি অংশজুড়ে বালি-পাথর যত্রতত্র ফেলেছে। এর ফলে চরম যানজটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। যার কারণে এদিন চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।

এদিকে ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা কোনো মন্তব্য করেননি। ট্রাফিক পুলিশের ওসি বিটুল পাল জানিয়েছেন, সম্পূর্ণভাবে বেআইনি কাজ করা হয়েছে। এভাবে জাতীয় সড়কের অংশজুড়ে বালি-পাথর ফেলা কোন ভাবে বরদাস্ত করা হবে না। ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *