গৃহবধূর রহস্যজনক অবস্থায় ঘর থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার

বিয়েতে পণের দাবি মতো এন্ড্রোয়েড মোবাইল সেট না দেওয়ায় স্ত্রীর উপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। এরপরই বুধবার সকালে রহস্যজনক অবস্থায় ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় শ্বশুর বাড়ির শোবার ঘর থেকে। মৃত গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ , তাদের মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে অভিযুক্ত জামাই সহ শ্বশুর বাড়ির লোকেরা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদা থানার রাহুত গ্রামে। বিষয়টি জানতে পেরে ওই এলাকায় তদন্ত যায় পুরাতন মালদা থানার পুলিশ। মৃতদেহটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে পুলিশ। পাশাপাশি মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। 

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে , মৃত গৃহবধূর নাম ফাহমিদা বিবি (১৮)। তার বাবার বাড়ি ইংরেজবাজার থানার নরহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের আনন্দিপুর এলাকায়। পেশায় দিনমজুর সাহাবুল শেখের মেয়ে ফাহামিদার সাথে গত ছয় মাস আগে পুরাতন মালদা থানার রাহুত গ্রামের বাসিন্দা রাক্কু শেখের ছেলে জহুরুল শেখের সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই পনের দাবী করে গৃহবধূর স্বামী শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। বিয়ের পরে নগদ ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয় স্বামী জহুরুলকে। এরপরেও গৃহবধূকে আরো কুড়ি হাজার টাকা চাপ দেওয়া হয়। সেই টাকায় অ্যান্ড্রোয়েড মোবাইল সেট কেনার কথা জানানো হয় শ্বশুরবাড়ি পক্ষ থেকে।

সেই টাকা না দেওয়ায়  মাঝেমধ্যেই মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হতো ওই গৃহবধূকে। এই নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কয়েকবার ও গ্রামের সালিশি সভা বসানো হয়েছে। তাতেও সমাধান হয়নি। গৃহবধূকে অত্যাচারের জন্য থানাতে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছিল স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ি বিরুদ্ধে। তাতে কোন কাজ হয়নি। ফের সপ্তাহখানেক আগে গৃহবধূকে আবার চাপ দেওয়া হয় কুড়ি হাজার টাকা আনার জন্য। না আনাই মেয়েকে মারধর ও মানসিক অত্যাচার করত স্বামী জহুরুল ও তার পরিবার বলে অভিযোগ। এরপরই বুধবার সকালে ওই গৃহবধূর রহস্যজনক অবস্থায় শোবার ঘর থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

মৃত গৃহবধূর এক আত্মীয় লাজিমা খাতুন জানিয়েছেন,  কিছুদিন ধরেই টাকার জন্য মেয়েকে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করছিলো জামাই জহুরুল শেখ। আমাদের ধারণা মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করার পর ফাঁসে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতের পরিবার।

পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুরাতন মালদা থানার পুলিশ। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *