উত্তরপূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার শিলিগুড়ি। দেশ বিদেশের বহু পর্যটক পার্শ্ববর্তী রাজ্য সিকিম, ভূটান সহ দার্জিলিং ও ডুয়ার্সের প্রকৃতির মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দিতে ছুটে আসেন। বছর ভর প্রকৃতির টানে পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। কিন্তুু করোনার জন্য কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছে। প্রকৃতি তার কোল সাজিয়ে রাখলেও দেখা নেই পর্যটকদের। ফলে শূন্যতা সর্বত্র বিরাজ করছে। তরাই,ডুয়ার্স সিকিম ও দার্জিলিং যেতে হলে পর্যটকদের আসতে হবে নিউজলপাইগুড়ি স্টেশনে। ট্রেন থেকে নেমে ছোট, বড় গাড়ী ভাড়া নিয়ে রওনা হন পর্যটকরা যে যার উদ্দেশ্যে। তা ছাড়া নানা কাজে কলকাতা, দিল্লি, চেন্নাই সহ বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য যাত্রীদের ভীড়ে পা রাখা যায় না নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে। “আজ শূন্যতা”।করোনা ভাইরাস নিউ জলপাই গুড়ি স্টেশনের সেই কোলাহলকে শূন্যতায় পরিনত করেছে।ট্রেনের চাকার ঘর্ষনের শব্দ, প্লাটফর্ম কাপিয়ে ট্রেনের হুইসেল শোনা গেলেও কুলিদের সেই চিৎকার বা ছুটোছুটি দেখা যায় না। রেল দফতর গুটি কয়েক রেল চালালেও যাত্রী নাম মাত্র কয়েকজন।নিউজলপাইগুড়ি স্টেশনে বর্তমানে ১০০-র অধিক কুলি রয়েছে যাদের জীবিকা নির্বাহ করে যাত্রীদের লাগেজ বহন করে। ট্রেন চললেও যাত্রী না থাকায় জীবিকা প্রায় বন্ধের মুখে। তারা জানান যদি সরকার তাদের কোন ব্যাবস্থা না করে তবে পরিবার নিয়ে না খেয়ে কাটাতে হবে। একই অবস্থা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের হকারদের, যাত্রী না থাকায় পশরা সাজিয়ে রাখলেও কোন ক্রেতা নেই। সারা দিন দোকান খুলে রাখলেও বিক্রি নেই বললেই চলে। ফলে মহাজনের টাকা কি ভাবে দিবে, আর কি ভাবে সংসার চালাবে তা নিয়ে সমস্যায় পড়েছে তারা। অন্যদিকে চরম বিপদে পড়েছে গাড়ীর চালকরা। ব্যাঙ্কের থেকে ঋন নিয়ে কিনেছেন গাড়ী। যাত্রী বা পর্যটক না থাকায় গাড়ীর চাকা স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। যে ট্রেন গুলি চলছে তাতে দুএকজন যাত্রী এলে তা নিয়ে শুরু হচ্ছে চালকদের মধ্যে বচসা, কে যাত্রীকে তার গন্তব্যে পৌঁছাবে। তাই চালকরা চাইছে তাদের সংসার বাঁচাতে সরকার কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করুক। ব্যাঙ্কের ঋন আর সংসার চালাতে প্রায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে তারা।