এমন এক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণু অবলীলায় বিশ্ব কাঁপিয়ে চলেছে মানুষকে উপহাসের পাত্র করে। এখন ফ্যাশন বলতে মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস, পারলে সারা শরীর ঢাকা পিপিই দিয়ে। একদিকে নতুন কোনও বিক্রি নেই। তার উপরে পুরোনো অর্ডারও বাতিল হয়ে গিয়েছে বহু নামী ব্র্যান্ডের।
বলা হয়ে থাকে, ছায়ায় সঙ্গে যুদ্ধ করা যায় না। কিন্তু করোনাভাইরাসের বাস্তবতায় সেটাও বুঝি এখন সম্ভব। চোখে দেখা যায় না, এমন এক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণু অবলীলায় বিশ্ব কাঁপিয়ে চলেছে মানুষকে উপহাসের পাত্র করে। গোটা বিশ্বকে আতঙ্কের সুতোয় বেঁধেছে। নড়িয়ে দিয়েছে অর্থনীতির ভিত। এখন ফ্যাশন বলতে মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস, পারলে সারা শরীর ঢাকা পিপিই দিয়ে। ভাবতে পারছেন, ফ্যাশন দুনিয়া করোনার জেরে কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত?
স্পেনের নামকরা ফ্যাশন ব্র্যান্ড জারা প্রায় ১২০০ দোকান বন্ধ করে দিতে চলেছে ঠিক এই কারণেই। করোনাভাইরাস প্রবল ভাবে প্রভাব ফেলেছে ফ্যাশন দুনিয়ায়। অধিকাংশ লাক্সারি ব্র্যান্ড ধুঁকছে। ফ্যাশন বিশেষজ্ঞদের মতে আগামী ১৮ মাস একেবারেই ভালো নয় ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির জন্য। এ বছর বিক্রি প্রায় ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে মহামারির প্রকোপে। একদিকে নতুন কোনও বিক্রি নেই। তার উপরে পুরোনো অর্ডারও বাতিল হয়ে গিয়েছে বহু নামী ব্র্যান্ডের।
বারবেরি, কোচ-এর মতো লাক্সারি ব্র্যান্ড করোনাভাইরাস পরবর্তী সময়ে রেকর্ড মাত্রায় লোকসান করেছে। একই অবস্থা লুই ভিতোঁ বা গুচ্চিরও। আর এক নামকরা ব্রিটিশ ব্র্যান্ড মালবেরি প্রায় ২৫ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইতোমধ্যেই। কম কর্মী নিয়েই বিশ্বজুড়ে কাজ চালাবে তারা।
দোকান বন্ধ হলেও কর্মী ছাঁটাইয়ের কোনও চিন্তাভাবনা নেই জারার। যেসব দোকানগুলি বন্ধ হচ্ছে, সেই কর্মীদের অনলাইন বিক্রির নানা কাজে নিয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মূলত জারার এশিয়া এবং ইউরোপের ছোট ছোট দোকানগুলি, যা একেবারেই লাভের মুখ দেখছিল না, বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কিছুদিনের মধ্যেই। ব্র্যান্ডের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ৭৪১২ থেকে দোকান সংখ্যা কমিয়ে আনা হবে ৬৭০০ বা ৬৯০০ তে। প্রায় ৪৫০টি নতুন দোকান খোলার পরিকল্পনা ছিল বিশ্বজুড়ে। আপাতত স্থগিত থাকছে সেগুলো। স্ট্রিট ফ্যাশন থেকে শুরু করে লাক্সারি ব্র্যান্ড- অর্থনৈতিক চাপের মুখে আপাতত সবাই। তবে এই চাপ যে সহজে যাওয়ার নয়, তা বলাই বাহুল্য।
লকডাউন শিথিল হলেও মুখে মাস্ক ও হাতে স্যানিটাইজার ঘষা অভ্যস্ত করে ফেলেছেন বেশিরভাগ মানুষ। এবারের দুর্গাপুজোতেও এই অভ্যেসের বাইরে কেউ বেরতে পারবেন বলে মনে করছেন ফ্যাশনপ্রেমীরা। সেকথা মাথায় রেখে মাস্ককেই এবারের পুজোয় ফ্যাশন আইকন হিসাবে সামনে তুলে ধরতে চাইছেন ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে কলকাতার বিভিন্ন বেনারসির দোকানে শাড়ির সঙ্গে ম্যাচিং করা মাস্কও বিক্রি শুরু হয়েছে।