অসমে সর্বহারা কয়েক লক্ষ্য মানুষ

বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই অবিরাম গতিতে বৃষ্টির ফলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে অসমে। কিন্তু বৃষ্টি না থামার ফলে বেড়েই চলছে বন্যা পরিস্থিতির। যত দিন যাচ্ছে তত আরো ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে দেশের উত্তর-পূর্বের রাজ্য অসমের বন্যা পরিস্থিতি। ইতিমধ্যেই অসমের বানভাসি বন্যা প্রাণ কেড়েছে ৩০ জনের। এই বন্যা পরিস্থিতিতে সর্বহারা হয়ে সরকারি শেল্টারগুলিতে আশ্রয় নিয়েছেন কমপক্ষে ৫.৬১ লক্ষ রাজ্যের সাধারণ মানুষ।

বানভাসি বন্যায় ইতিমধ্যেই জলের তলায় অসমের ৯৫৬ টি গ্রাম। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৪৭১৩৯.১২ হেক্টর জমির কয়েক কোটি টাকার ফসল। এমতাবস্থায় ফের আগামী দুদিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি হল অসমে। আবহাওয়া দপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহের শেষে অর্থাৎ শনি এবং রবিবার ফের অসমের পাঁচ জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তরের এই পূর্বাভাষে কার্যত মাথায় হাত প্রশাসনের। ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে যে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা থেকে রাজ্যবাসীকে উদ্ধার করতে কালঘাম ঝরছে রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর। কোনও কোনও জায়গায় পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে উদ্ধারকাজে নামাতে হয়েছে সেনা। এমতাবস্থায় আগামী দুদিন আরও বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি যে কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে আপাতত সেই আশঙ্কাতেই রাত কাটাচ্ছে রাজ্যবাসী।

অসমের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কামপুরে ও নগাঁও জেলার রাহা এলাকায় একজন করে মৃত্যুর খবর মিলেছে। কাছাড়, ডিমা হাসাও, হোজাই, কার্বি আংলং পশ্চিম, মরিগাঁও, নগাঁও, হাইলাকান্দি জেলা এখনও কার্যত বানভাসি অবস্থায় রয়েছে। নগাঁও জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে ৩.৬৮ লাখেরও বেশি মানুষ বিপর্যস্ত হয়েছেন। কাছাড় জেলায় দেড় লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মরুগাঁও এলাকায় ৪১ হাজারেরও বেশি মানুষ বিপর্যস্ত হয়েছেন।

বর্তমানে ৯৫৬টি গ্রাম জলের তলায় রয়েছে। ৪৭১৩৯.১২ হেক্টর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এই মুহূর্তে ৩৬৫টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। ছয়টি জেলায় ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার খোলা রয়েছে। সেখানে ৬৬ হাজার ৮৩৬ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৮৮। এখনও পর্যন্ত ১২৪৩.৬৫ ক্যুইন্টাল চাল, ডাল, নুন, ৫০৭৫.১১ লিটাপ সরষের তেল, ৩০০ ক্যুইন্টাল পশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *