বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক এবং রোগী ও তাদের আত্মীয়েরা । মালদার ইংরেজবাজার ব্লকের মহদীপুর এলাকার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্তে লকডাউন ঘোষণা হতেই নিজেদের দেশে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় দিন গুনছেন বাংলাদেশি বহু পরিবার। ইতিমধ্যে সোমবার দুটি পরিবারকে তাদের দেশে ফেরার ছাড়পত্র দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু এখনো আরও বেশকিছু পরিবার আটকে রয়েছে মালদার মহদীপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সীমান্তে, তারা এখন নিজেদের দেশে কোনরকমে ফিরে যাবার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন । এই পরিস্থিতিতে অবশ্য স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও ওইসব পরিবারগুলোর জন্য খাদ্য সামগ্রী নিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ।
কেবলমাত্র বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি পত্র মিললেই দেশে ফিরতে পারছেন আটকে থাকা মানুষজন। মালদার মহদীপুর সীমান্তে তাদের কষ্ট এবং সমস্যার কথা জানিয়েছেন, প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মানুষ জন।
বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার বাসিন্দা মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিন, বেশ কিছুদিন আগে সপরিবারে ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। চিকিৎসা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও সরকারি নিয়মের বেড়াজালে আটকে যান তিনি। দীর্ঘদিন বাড়ি ফিরতে পারেন নি। নানাবিধ আর্থিক সমস্যা এবং আরো বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাকে। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি পাওয়ায়, এবারে ঘরে ফিরবেন নাসিরুদ্দিন। তিনি বলেন, তার মতো বহু মানুষ এখনও এপারে আটকে রয়েছেন। চিকিৎসার প্রয়োজনে তারা এদেশে এসে এখন দেশের বাড়িতে ফেরা নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন।
বাংলাদেশের ঠাকুরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ মানিক, কুড়ি দিন আগে ভারতে শেষ হয়েছে তার চিকিৎসার কাজ। তাও লকডাউনে সীমান্ত বন্ধ থাকায় বাড়ি ফিরতে পারছেন না। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা মোকাবিলা পর, অবশেষে সোমবার বাংলাদেশ সরকারের ছাড়পত্র পাওয়ায় ফিরে যাবেন বাড়িতে।
মালদা জেলায় যখন করোনার সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তখন তা রোধে সরকারের তরফে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই মালদার এই স্থলবন্দর দিয়ে সরকারের বিশেষ অনুমতি পত্র না থাকলে মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে যেমন ভিন দেশ থেকে আসা সংক্রমণ কিছুটা রোধ করা গেছে। কিন্তু অন্যদিকে দীর্ঘদিন বাংলাদেশ থেকে ভারতে মানুষ আসতে না পারায় তারা যেমন সমস্যায় পড়েছেন, উল্টোদিকে মানুষজন না আসায় চরম হতাশা এবং দুরবস্থার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন সীমান্ত সংলগ্ন ব্যবসায়ীরা। দেশ এবং তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হলেও সংক্রমনের ভয়ে সরকারি এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তারা।