অনটনের জ্বালা, প্রতিবেশীদের করোনা সন্দেহে অতিষ্ঠ! ঠাকুরপুকুরে একই পরিবারে আত্মঘাতী ৩

গায়ে জ্বর, হাসপাতালে ভর্তি নেয়নি। কলকাতার একের পর এক হাসপাতাল ঘুরেও মেলেনি চিকিত্‍সা। ঘরে ফিরে, পরিবারের সকল সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করলেন পৌঢ়। এমন ভয়াবহ অভিযোগে চাঞ্চল্য ছড়াল ঠাকুরপুকুরের সত্যনারায়ণ পল্লিতে। 

ঘরে চক দিয়ে লেখা সুইসাইড নোট। ঠাকুরপুকুরের সত্যনারায়ণ পল্লির এক চিলতে ঘর থেকে পুলিস উদ্ধার করল একই পরিবারের তিনজনের দেহ। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, জ্বর থাকায় গৃহকর্তাকে ভর্তি নেয়নি তিন-তিনটি হাসপাতাল, গোদের ওপর বিষ ফোঁড়ার মতো আর্থিক অনটনের বোঝা। সবমিলিয়ে মানসিক অবসাদ। আর তা থেকেই আত্মহত্যা বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিসের। ছেলে প্রতিবন্ধী। স্ত্রী পক্ষাঘাতে বিছানায়। তারওপর অনটনের জ্বালা। মড়ার ওপর খাড়াঁর ঘা পাড়া প্রতিবেশীর করোনা সন্দেহ। অশীতিপর বৃদ্ধের সহ্যের সীমা পেরিয়েছিল আগেই। 

অবসর নিয়েছেন আগেই। জমানো টাকাতেই সংসার চলত গোবিন্দ কর্মকারের। স্ত্রী-ছেলের চিকিত্সার পিছনেই তার বেশিরভাগ খরচ হত। তারওপর টানা লকডাউন। চিন্তা-ভাবনায় অসুস্থ হয়ে পড়েন গোবিন্দবাবু। রবিবার মাথা ঘুরে পড়ে যান রাস্তায়। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, সামান্য জ্বর থাকায় করোনা সন্দেহে তাঁকে ভর্তি নিতে চায়নি কোনও হাসপাতাল।

হাসপাতাল জানায় করোনা হয়নি। কিন্তু,সন্দেহ কাটেনি পাড়া প্রতিবেশীর। শারীরিক অসুস্থতা আর মানসিক কষ্টের জোড়া ফলায় প্রতিমুহূর্তে বিদ্ধ হতে থাকেন গোবিন্দবাবু। মঙ্গলবার সকালে তিনজনের দেহ মেলে ঘরেই। মেঝেতে লেখা সুইসাইড নোট। পাশে রাখা বাটিতে লেখা রয়েছে সাবধানবানী। খতিয়ে দেখে, পুলিসের অনুমান মানসিক অবসাদে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে কর্মকার পরিবার। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়না তদন্তে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *