এক নয়া অভ্যুথানের রচনা হলো৷ অবশেষে সমাপ্তি ঘটলো মহা যুদ্ধের৷ ঘোষণা হলো যুদ্ধ সমাপ্তির৷ নতি স্বীকার করে নিতে হলো তালিবানদের কাছে৷ তালিবান যুগ ফিরে এলো আফগানিস্তানে। আফগানিস্তানে পতন গনি সরকারের৷ তালিবানের কাছে নতি স্বীকার করেছে আফগান সরকার। একটানা কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা ‘যুদ্ধ’ শেষের ঘোষণা তালিবানের৷ একশো দিনেরও বেশি সংঘর্ষের পর আফগানিস্তান দখল করেছে তালিবান। আফগানিস্তান যেন হঠাৎ করেই পিছিয়ে গিয়েছে ২০ বছর আগে৷ সেই একই ভয়াবহ দৃশ্য কাবুলের রাস্তায়৷ রবিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের দখল নিয়েছিল তালিবানরা। কিন্তু দীর্ঘ ২০ বছর ধরে কোটি কোটি ডলার খরচ করে, হাজার হাজার জওয়ানের দেহ কফিনবন্দি করে, দেশের ইতিহাসের দীর্ঘতম যুদ্ধ শেষ করে খালি হাতেই আফগানিস্তান থেকে ফিরতে হচ্ছে আমেরিকাকে।
কাবুলের প্রেসিডেন্ট প্যালেসের দখল নিল তালিবান৷ সেনাকে নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম চালিয়েও তালিবানিদের মোকাবিলা না করতে পেরে পদত্যাগ করেন আফগান প্রেসিডেন্ট আসরফ ঘানি। এমনকী তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। সম্ভবত তাজাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি৷ তাঁর সঙ্গে দেশ ছেড়েছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিরউল্লাহ সালেহ-ও। আফগান কূনীতিকরাও দেশ ছেড়েছেন বলে জানা গিয়েছে৷ নয়া আফগান রাষ্ট্রপতি হতে চলেছে তালিবান কমান্ডার মোল্লা আবদুল গনি বরাদর৷ এদিকে ক্ষমতা দখল করলেও তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি দিল না ব্রিটেন, রাশিয়া৷
তালিবানদের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানান, ‘‘তালিবানি যোদ্ধারা এখন কাবুল শহরে ঢোকার সব প্রবেশ পথেই রয়েছেন ৷ ক্ষমতা হস্তান্তরের গোটা প্রক্রিয়াটা শান্তিপূর্ণভাবে হোক ৷ সেটাই চাইছে তারা ৷ আর কয়েকদিনের মধ্যেই দেশের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে চলে আসবে ৷ এই প্রক্রিয়ায় কোনও রক্ত ঝরুক, তা তারা চায় না ৷ শান্তিপূর্ণভাবেই আফগানিস্তানে পুনরায় ক্ষমতায় এসেছে তালিবানরা ৷ ’’
কাবুলের মানুষ এখন আতঙ্কিত ৷ এত তাড়াতাড়ি তালিবানরা যে তাদের শহরে ঢুকে পড়বে, তা কেউ ভাবতেও পারেননি ৷ আফগান সরকারের পক্ষ থেকে কোনও খবরও ছিল না ৷ রবিবার সকালে উঠেই কেউ সপরিবারে গিয়েছেন বিমানবন্দরে। ব্যাঙ্কের সামনে পড়েছে লম্বা লাইন। ভিটে ছেড়ে যাওয়ার আগে শেষ সম্বলটুকু নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন অনেকেই। সকাল থেকে কাবুলের রাস্তায় প্রবল ট্র্যাফিক জ্যাম, গাড়ির ঠেলাঠেলি জানান দিয়েছে, আতঙ্ক ঢুকেছে মানুষের মনে। এক কথায় আফগানিস্তানের পরিস্থিতি এখন ভয়াবহ।