‘আত্মনির্ভর প্রকল্পই ভবিষ্যতে ভারতকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।’ ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের (ICC)-র ৯৫ তম বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ফের একবার ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্প প্রসঙ্গ তুলে ধরলেন প্রধানমন্ত্রী (PM Narendra Modi)। পাশাপাশি প্রশংসায় ভরিয়ে দেন কলকাতা তথা বাংলাকে। উদ্যোগপতিদের এগিয়ে আসার বার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বরাবর শুনে এসেছি, বাংলা যা আজ ভাবে, গোটা ভারত আগামীকাল সেকথা ভাবে। তাই বাংলাকে এগিয়ে আসতে হবে। আমি মনে করি, কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গ আবারও দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারবে।’
ভার্চুয়াল ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গোটা বিশ্বের সঙ্গে দেশও করোনাভাইরাসের (Coronavirus) বিরুদ্ধে লড়াই করছে। রয়েছে পঙ্গপাল সমস্যা। কিছু এলাকায় ভূমিকম্প হচ্ছে। অসমে তৈলকূপে আগুন লেগেছে। তবু সব বিপর্যয়ের সঙ্গে একজোট হয়ে লড়ছি আমরা। কিন্তু, ঐক্য ও সাহসের শক্তির সঙ্গে একজোট হয়ে লড়ছে দেশ।’ প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘করোনা সংকট আমাদের শিক্ষা দিয়েছে। আত্মনির্ভর (Atma Nirbhar Bharat) হওয়ার প্রতিজ্ঞা করিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘পরিবার থেকেই আত্মনির্ভর হওয়া শুরু হয়।’
আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্প নিয়ে সরব হয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিরক্ষা, কয়লা, সৌরক্ষেত্র, বিমান পরিবহণে যদি আমরা আত্মনির্ভর হতে পারলে সুবিধা হত। আত্মনির্ভর ভারত-এর অর্থ বিদেশ থেকে সবচেয়ে কম জিনিস দেশ আমদানি করুক। নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে ভারতকে। ভবিষ্যতে আমাদের আত্মনির্ভর হতে হবে।’ আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে সংশোধনীর কথা মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘স্থানীয় পণ্যের জন্য কাস্টার গঠন হবে।’ পশ্চিমবঙ্গেও ‘জুট-ক্লাস্টার’ তৈরি হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। কলকাতার উৎপাদন ইতিহাস মনে করিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘উৎপাদনের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ ছিল কলকাতা। আমি মনে করি কলকাতা ফের দেশকে নেতৃত্ব দিতে পারবে।’ সিঙ্গল ইউজ প্ল্যাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ হলে বাংলার ‘লাভ সবচেয়ে বেশি’ হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী মোদী। তাঁর কথায়, ‘পশ্চিমবঙ্গের লাভ বেশি। কারণ, ওখানকার পাটশিল্পের ব্যাপক লাভ হবে। ভাবুন পশ্চিমবঙ্গের তৈরি পাটের ব্যাগ সারা দেশের মানুষের হাতে থাকলে, রাজ্যবাসী কতটা গর্ব করবেন।’ পাটের প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল সম্পর্কেও খোঁজ নেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশে বিপুল জনসম্পদ রয়েছে জানিয়ে ‘হলদিয়া-বারাণসী জলপথ’ প্রসঙ্গের কথা মনে করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব ভারতেও জলপথ বাড়ানোর চেষ্টা চলছে।’ তাঁর কথায়, ‘এতে পরিবহণ খরচ কমবে। রাস্তায় যানবাহন জটও কমবে।’
বিশ্বের জোগানে শৃঙ্খলা ভারতকে এগিয়ে যেতে, আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পের পাশাপাশি ‘পিপল, প্ল্যানেট এবং প্রফিট’- এই তিন বিষয় একসঙ্গে নিয়ে চলার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।