রাজ্যে ডেঙ্গি বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে সপ্তাহখানেক বাদেই দুর্গাপুজো, সে কথা মাথায় রেখেই এ বার আগেই স্বাস্থ্য বিভাগকে সতর্ক রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। পুজোর সময় স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল করে ‘রস্টার ডিউটি’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। রাজ্য সরকারের পুজোর ছুটি শুরু হচ্ছে ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে, চলবে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত। এই সময় কালে চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল করে, ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে তাঁদের দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি নির্দেশিকাও জারি করেছে স্বাস্থ্য ভবন। যেখানে মোবাইল নম্বর দিয়ে কোন চিকিৎসক কোন দিন দায়িত্বে থাকছেন তারও উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতি দিন দুই থেকে পাঁচ জন করে চিকিৎসককে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তবে ওই নির্দেশিকায় ডেঙ্গি প্রাদুর্ভাবের কথা উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু উৎসবের মরশুমে স্বাস্থ্য ভবনের এ হেন সক্রিয়তাকে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের কারণ হিসাবেই দেখছে স্বাস্থ্য ভবনের একাংশ।
বৃহস্পতিবার নবান্নে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে রাজ্যে ডেঙ্গি বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। প্রত্যেকটি জেলার জেলাশাসকের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করে তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। প্রত্যেকটি পুরসভা এলাকায় কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক করে প্ল্যানিং করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালগুলিতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। পুজোর আগে ও পরে এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন। জল জমতে পারে, এরকম জায়গাগুলি জরুরি ভিত্তিতে পরিষ্কার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিকে। সূত্রের খবর বৃহস্পতিবারের বৈঠকে কয়েকটি জেলায় ডেঙ্গি সংক্রমণ কেন বাড়ছে তা নিয়ে মুখ্যসচিবের প্রশ্নের মুখে পড়েন ওই সব জেলার জেলাশাসক। প্রশ্নের মুখে পড়ে উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর-সহ কয়েকটি জেলা। ওই জেলাগুলিতে কী ভাবে কাজ হচ্ছে তা নিয়ে খুঁটিনাটি জানতে চান মুখ্যসচিব। ডেঙ্গি সংক্রমণ যাতে কোনও ভাবেই হাতের বাইরে না চলে যায়, সেই কারণেই স্বাস্থ্য দফতরকে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। তাই তড়িঘড়ি চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা জারি করে পুজোর সময় তাঁদের ‘রস্টার ডিউটি’তে কর্মরত থাকতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও ডেঙ্গি প্রাদুর্ভাব নিয়ে জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। এলাকা পরীক্ষার পরিচ্ছন্ন রাখতে জেলা শাসকরা যাতে সক্রিয় হন সে ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। বিশেষ করে বিধাননগরের এফডি ব্লকের পুজোর উদ্বোধনী গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে ভ্যাটে দুর্গন্ধ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, তা নিয়েও বিধাননগরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদেরও নিজেদের দায়িত্ব প্রসঙ্গে সচেতন থাকার কথা বলেছেন তিনি।